উত্তর ইরাকে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি গড়ার ঘোষণায় ইরাকের প্রতিক্রিয়া!

 

ভোরের লিখা নিউজ ঃ

 শুক্রবার তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল একেপি’র এক রূদ্ধদ্বার বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলাইমান সোইলু বলেছেন: ইরাকের আধা-স্বায়ত্বশাসিত কুর্দিস্তানের কাছে আংকারা সামরিক অভিযান জোরদার করবে। সিরিয়ায় আমরা যেভাবে সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছি, সেভাবে ইরাকেও ঘাঁটি গড়বো। কুর্দিস্তানের দুহোক প্রদেশের মেতিনা অঞ্চল হচ্ছে পর্বতময় কান্দিলের রুট – যেখানে কুর্দি গেরিলাদের ব্যাপক তৎপরতা রয়েছে।

ঐ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহ এক বিবৃতিতে বলেছেন: তুর্কি সেনাবাহিনীর হামলা ইরাকের সার্বভৌমত্ব ও সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণের পরিপন্থী। আমি এ ধরনের আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। তুরস্কের ভেতরে চলমান গেরিলা সংকট সব পক্ষের মাঝে আলোচনা ও সমন্বয়ে ভিত্তিতে মীমাংসা করা উচিত।

ইরাকের মন্ত্রিসভা সেদেশে তুর্কি সামরিক অভিযানের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাগদাদে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে একটি প্রতিবাদ লিপি তাকে দিয়েছে। এ নিয়ে গত সপ্তাহে দুবার এ রাষ্ট্রদূত তলবের ঘটনা ঘটলো। এছাড়া, দেশটির মন্ত্রিসভা তুর্কি হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘে অভিযোগ করতে ইরাকের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তদুপরি, ইরাকের একদল সাংসদ প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাজেমীর সই করা এক বিবৃতিতে ইরাকে তুর্কি হামলার জবাব দেয়ার পাশাপাশি আঙ্কারার সাথে বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার ইরাকের সংসদে আন-নাহাজাল ওয়াতানী গ্রুপের প্রধান আম্মার তা’মেহ বলেছেন: এ ধরনের পরিকল্পনা উস্কানিমূলক এবং ইরাকের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। তুরস্কের এ সম্প্রসারণকামী পরিকল্পনা দু দেশের সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলবে এবং সবার জন্যে ক্ষতি বয়ে আনবে। এ ধরনের উ্‌কানিমূলক পদক্ষেপ অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও সমন্বয়ে বাধা সৃষ্টি করবে। ফলে, এ অঞ্চলে নতুন করে সন্ত্রাস ও উগ্র মতবাদ ছড়িয়ে পড়বে এবং উত্তেজনার বড় ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। এতে দায়েশসহ বিভিন্ন উগ্র গোষ্ঠী লাভবান হবে।

তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরাকের বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ সত্বেও তুর্কি হামলা ঠেকাতে ইরাক থেকে নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনার কথা শোনা যায়নি। ইরাকের কোনো কোনো দল ও সাংসদ প্রতিবাদ জানালেও অনেকে মনে করেন, ইরাকের কোনো কোনো কর্মকর্তার সাথে গোপন সমন্বয়ের ভিত্তিতেই তুরস্ক এসব হামলা চালাচ্ছে। ইরাকের আল-হুকমা দলের নেতা আম্মার হাকিম তুর্কি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন: ইরাকিরা গত কয়েক দশক ধরে জাতীয় স্বাধীনতা ও সম্মান বজায় রাখতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয় – এমন কোনো কাজ আমরা মেনে নেবো না। তাই, সরকারের উচিত – প্রতিবেশী সব দেশ, বিশেষ করে তুরস্ক যেনো ইরাকের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানতে না পারে, সেজন্যে পদক্ষেপ নেয়া। সূত্র: আল-মনিটর, ইরাকি নিউজ এজেন্সি ও পার্সটুডে।

Post a Comment

0 Comments