জামালপুরে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী কর্তৃক মিথ্যা মামলা দায়ের


 নিজস্ব প্রতিবেদকঃ


জামালপুরে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী কর্তৃক মামলার বাদীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে  মিথ্যা মামলা দায়ের করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। 

জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার ৯নং রানাগাছা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের তিন তিনবারের নির্বাচিত মোঃ আব্দুস ছালাম মেম্বার বরাবরের মতো এবারও নির্বাচন করার উদ্দেশ্যে মনোনয়ন পত্র দাখিল করে। এদিকে একই গ্রামের জনৈক মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ কেরামত উল্লাহ উজ্জ্বলও (৪০) একই ওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন পত্র দাখিল করে এবং ছালাম মেম্বারের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে বিভিন্ন হুমকী ধামকীসহ ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তদুপরি ছালাম মেম্বারকে রুখে দিতে না পেরে তার উপর সশস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করে। এরই এক পর্যায়ে গত ১৭ অক্টোবর রবিবার রাত সাড়ে ১১টার সময় ছালাম মেম্বার, মোঃ ইয়াদ আলীর ছেলে মোঃ মঞ্জুর আলী এবং মৃত হোসেন আলীর ছেলে মোঃ মোখলেছুর রহমান শেহরাতলী মধ্যপাড়া গ্রামের চৌরাস্তা মোড়ে জনৈক বাবুলের মুদি দোকানের পশ্চিম পার্শ্বে পাকা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আলোচনা করাকালে মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ কেরামত উল্লাহ উজ্জ্বলের নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি সশস্ত্র বাহিনী তাদের দেখে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রামদা, লোহার রড, লোহার শাবল, লোহার পাইপ, হকিষ্টিক হাতে অতর্কিতভাবে এসে তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে। এসময় শেহড়াতলী গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ আবুল কাশেমের নির্দেশে তাদের তিনজনকে এলোপাথাড়িভাবে মারপিট করে। এসময় মোঃ কেরামত উল্লাহ উজ্জ্বল তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে ছালাম মেম্বারকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারলে সেই কোপে ছালাম মেম্বারের মাথার বামপাশে মারাত্মক কাটা জখম হয় এবং ছালাম মেম্বার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দড়িহামিদপুরের মোঃ বাবুল মিয়ার ছেলে ফয়সাল তার দুই হাত দিয়ে ছালাম মেম্বারের টুটি চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এদিকে মোঃ আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ সুজন মিয়া তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে মঞ্জুর আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারলে সেই কোপে মঞ্জুর আলীর মাথার বামপাশে গুরুতর কাটা জখম হয়। অপরদিকে মোঃ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ মবিন মিয়া তার হাতে থাকা লোহার শাবল দিয়ে মঞ্জুর আলীর ডান পায়ের গোড়ালিতে বারি মারলে সে বারি লেগে মঞ্জুর আলীর ডান পায়ের হাড় ফেটে গুরুতর জখম হয়। সে আঘাতে মঞ্জুর আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত মোশারফ হোসেনের পুত্র মোঃ দেলু তার দুই হাত দিয়ে মঞ্জুর আলীর টুটি চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এদিকে মোঃ জালাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন তার হাতে থাকা দা দিয়ে মৃত হোসেন আলীর ছেলে মোঃ মোখলেছুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারলে সেই কোপ ফিরাতে গেলে তার ডান হাতে লেগে তার শাহাদত আঙ্গুলের মাথায় লেগে মাংস কেটে পড়ে যায়। এসময় মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ আবুল কাশেমের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মোখলেছের মাথায় বারি মারলে সে তার বাম হাত দিয়ে ফিরালে তার বাম হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলে লেগে গুরুতর হাড় ভাঙ্গা জখম হয়। এদিকে মোঃ আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ সুজন মিয়া তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে মোঃ মোখলেছুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারলে মোখলেছ সে কোপ তার ডান হাত দিয়ে ফিরানোর চেষ্টা করলে মোখলেছের ডান হাতের কুনুইয়ের নিচে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। এসময় সুযোগ বুঝে মোখলেছের শার্টের বুক পকেটে থাকা ৬ হাজার ২শ টাকা মৃত আব্দুস ছামাদের ছেলে মোঃ নূর ইসলাম নিয়ে যায়। 

এদিকে তাদের ডাকচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আর যাওয়ার সময় এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিলে তাদেরকে খুন করে গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। 

অপরদিকে এলাকাবাসী গুরুতর আহতাবস্থায় তাদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ছালাম মেম্বার বাদী হয়ে জামালপুর থানার একটি মামলা দায়ের করে। মামলার নম্বর ৪৫, তারিখ-১৯/১০/২০২১ইং। 

অপরদিকে মামলার প্রধান আসামী মোঃ কেরামত উল্লাহ উজ্জ্বল সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা জামালপুর দিনকালের ২৪ অক্টোবর সংখ্যায় 'পারিবারিক বিরোধকে নির্বাচনী সহিংসতায় চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা' শিরোনামে একটি বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করায়। কিন্তু এতেও কাজ না হলে সম্পূর্ণরূপে মামলার বাদী ও সাক্ষীদেরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলার প্রধান আসামী মোঃ কেরামত উল্লাহ উজ্জ্বল এবার মামলার বাদী ছালাম মেম্বারসহ ১২জনকে আসামী করে একটি কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে কল্পিত তারিখ ও সময়ের বর্ণনা দিয়ে গত ২৭ অক্টাবর আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী (দ্রুত বিচার) আদালত, জামালপুরে ১৬৯/২০২১(দ্রুত বিচার)মোকদ্দমা দায়ের করে।

এদিকে বারংবার নির্বাচিত অত্যন্ত জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ছালাম মেম্বার ও তার সমর্থকদের ওপর ন্যাক্কারজনক সশস্ত্র হামলা এবং উল্টো মিথ্যা মামলা দায়ের করার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এলাকাবাসী বলছে একদিকে হামলা তার উপর মিথ্যা মামলা এটাই বোধকরি উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর উদাহরণ। তারা সঠিক তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Post a Comment

0 Comments