অডিও কেলেঙ্কারিতে প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানকে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এ কথা জানান তিনি।
মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্কিত মন্তব্য করার কারণে বিভিন্ন মহলে সমালোচিত ছিলেন। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার কথোপকথন অশ্লীল এবং সংগঠনের নীতিবিরুদ্ধ। যারা দলের নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড করবে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান হানিফ।এসময় মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ‘সুপারিশ করা হবে’ বলে জানান তিনি।
ডা. মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সেটাই প্রমাণ করে বলেও জানান মাহবুবউল আলম হানিফ।
এদিকে দলটির আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত তিন মাসে ডা. মুরাদ হাসানকে ভিন্ন মানুষ মনে হয়েছে । এসময় তথ্যমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সুস্থতাও কামনা করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ডা. মুরাদ হাসানের কিছু ঘটনা সরকারকে বিব্রত করেছে। তার স্বাক্ষর করা পদত্যাগ পত্র এরিমধ্যে জনসংযোগ কর্মকর্তা কেবিনেটে জমা দিয়েছেন। দলের সদস্য পদ বিলুপ্ত করার বিষয়ে দল বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে। ডা. মুরাদ হাসেন দলের সাথে আলোচনা না করেই বেশ কিছু বক্তব্য দিয়েছেন। দল বা সরকার বিব্রত হয় এমন কিছুতে প্রধানমন্ত্রী কোনো ছাড় দেন না বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এর আগে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর অশালীন, শিষ্টাচার–বহির্ভূত, নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দেয়ায় জন্য ক্ষমা চান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান।
ফেইসবুক পোস্টে লিখেন, আমি যদি কোন ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
এর আগে, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নিজেই মেইলে তার পদত্যাগপত্র পাঠান। সকাল সোয়া ৯ টার দিকে নিজ দপ্তরের সাথে কথা বলে পদত্যাগ পত্র তৈরি করেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিষয়ে পরিবর্তী সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় থেকে নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এক নায়িকার সঙ্গে টেলিফোন আলাপে অশালীন মন্তব্যের অডিও ফাঁস হওয়ার পর গত কয়েক দিন ধরেই তুমুল আলোচনা চলছে ডা. মুরাদকে নিয়ে। এর জেরে সোমবার তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেই নির্দেশ পাওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে মুরাদ ইমেইল করে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। এর পরপরই ফেইসবুকে তার ওই পোস্ট আসে। এরপরেই তার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানালেন মাহবুব-উল আলম হানিফ।
0 Comments