কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়ার শফিউল্লাহ কাটা ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ আগুনে প্রায় ১ হাজার ২০০টি বসতঘর পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
রোববার (৯ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হলেও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, আগুনে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের বিভিন্ন কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, গত বছর ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীসহ ৫টি আশ্রয় শিবিরে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসতঘর পুড়ে যায়। এ সময় মৃত্যু হয় ৬ শিশুসহ অন্তত ১১ জন রোহিঙ্গার। আহত হন প্রায় ৪৫০ জন। গৃহহীন হয়েছিলেন ৪৫ হাজার মানুষ।
সর্বশেষ ২ জানুয়ারি উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের ২০ নম্বর ব্লকে আগুনের ঘটনায় একটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার পুড়ে যায়।
রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়েনের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন বলেন, শফিউল্লাহ কাটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি/১ ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ঘরে গ্যাসের চুলা থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর দ্রুত আগুন চারদিকের ঘরবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এপিবিএন, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।
সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের উখিয়া স্টেশন কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, কত ঘর পুড়েছে এখনও সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের সংখ্যা হাজার ছাড়াবে।
উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাজ উদ্দিন বলেন, ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ১০টি বসতবাড়ি পুড়ে গেছে। তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার ও শীতের কাপড়চোপড় দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগুনে যাদের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে কিংবা গৃহহীন হয়েছে, তাদের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের মাধ্যমে আশ্রয় শিবিরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। রাতের মধ্যে গৃহহীনদের সরিয়ে আনা হবে। সেখানে তাদের শীতের কাপড়চোপড়সহ রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
0 Comments