বরিশালে ব্রিজ নির্মাণে ধীর গতি,চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ


মাসুমা জাহান,বরিশালঃ ঠিকাদারের গাফিলতিতে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা খালের ওপর গার্ডার ব্রিজ নির্মাণে ধীরগতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী ধামুরা বন্দরের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। স্থানীয় ও উজিরপুর উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ধামুরা খালের আয়রন ব্রিজটি ট্রলারের ধাক্কায় খালে ভেঙে পড়ে। ওই বছরই ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরে এলজিইডির আইবিআরবি প্রকল্পের আওতায় তিন কোটি ৭৩ লাখ তিন হাজার ২৬৫ টাকা ব্যয়ে ধামুরা খালের ওপর ৪৪ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। বরিশাল নগরীর মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল কার্যাদেশ পায়। কার্যাদেশের এক বছরের মধ্যে (২০২০ সালের ১৭ এপ্রিল) ব্রিজটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয়রা অভিযোগ করে, ব্রিজ নির্মাণের শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীরগতিতে নির্মাণকাজ চালিয়ে আসছে। ব্রিজের গার্ডার নির্মাণের পর দীর্ঘদিন কাজ ফেলে রাখে প্রতিষ্ঠানটি। ব্রিজের অধিকাংশ কাজই বর্তমানে অসমাপ্ত। প্রতিষ্ঠানটি কবে নাগাদ কাজ শেষ করতে পারবে তা কেউই বলতে পারছে না। বরিশালের বাসিন্দা ঠিকাদার আমির হোসেন মূলত কী কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটির নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চালাচ্ছেন তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্রিজের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানান তাঁরা। শোলক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ধামুরা বন্দর ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আব্দুল হালিম জানান, নৌপথে পণ্য পরিবহনের জন্য ধামুরা খালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খালটি দিয়ে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন বন্দরের ব্যবসায়ীরা ট্রলারে পণ্য পরিবহন করে। এ ছাড়াও উন্নয়ন কাজের জন্য বালুবাহী জাহাজগুলো এ খালটি দিয়ে যাতায়াত করে। ঠিকাদারের খাম খেয়ালিপনায় চার মাস যাবৎ গুরুত্বপূর্ণ ধামুরা খালে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। মেসার্স আমির ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক আমির হোসেন জানান, ঢালাইয়ের জন্য দুই ধাপে স্টিল শাটারিং করতে কিছু দিন সময় লেগেছে। ৬ মার্চ ঢালাই হবে, তারপর ২৮ দিন কিউরিং করার পরে শাটারিং খুলে দেওয়া হবে। বরিশাল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন জানান, ঠিকাদারের গাফিলতি আছে, এটা সত্য। এ ছাড়াও ব্রিজটির দুইবার ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে এবং খাল দিয়ে বালুবাহী ট্রলার চলাচলের কারণে কাজ পিছিয়েছে প্রায় তিন মাস। তবে অতি দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।

Post a Comment

0 Comments