বান্দরবান প্রতিনিধি:
শিক্ষকতা মানব জাতির মহান পেশা বটে, তবে জোর যার মুল্লুক তার এ কথা সত্য। সম্প্রীতির বান্দরবানে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সখিনা আক্তার। এই শিক্ষিকা পাহাড়ে উপজাতীয় শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে গেছেন ঠিকই। পেশী শক্তি না থাকায় হয়তো বার বার অত্যাচারের শিকার।
এক যুগেরও বেশী সময়কাল ধরে নিম্ম ও উচ্চ আদালতে মামলা চলছিল স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী প্রয়াত এস কে রাজ্জাক এর সাথে শিক্ষিকা সখিনার।
মূলত: সখিনার বাবা ৬০ বছর পূর্বে থেকেই বান্দরবানে বসবাস। জীবিকার তাগিদে বান্দরবানে আগমন ঘটে এস কে রাজ্জাকের। প্রয়াত রাজ্জাক সখিনার বাবার কাছে একটুখানি মাথা গোজার আশ্রয় চাই। সখিনার বাবাও সরল মনে আশ্রয় দেয়। এদিকে শ্রম দিয়ে টাকার পাহাড় গড়তে শুরু করে প্রয়াত রাজ্জাক। ধীরে ধীরে হয়ে যায় এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। সে’বার সখিনার বাবাকে জমি বিক্রির প্রস্তাব দেয়। সখিনার বাবাও মেয়েদের ভবিষ্যতে কিছু করতে পারবে আশায় জমি বিক্রি করে। পাশাপাশি একই হোল্ডিংয়ে জমি হওয়ায়, সমতল ভূমি তো নয়, এ ভূমি পাহাড়ী ভূমির আদলে চাষাবাদের জমি, পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাসের উপযোগীও হয়েছে বটে। পার্বত্য অঞ্চলে ক্যাডেষ্টাল সার্ভে নাই বলে এ বিরোধের যেন অন্ত নেই।
প্রয়াত রাজ্জাক ক্রয়কৃত দলিল মতে সখিনার বাবা থেকে জমিও বুঝে পেয়েছিল বটে। সখিনার বাবার মৃত্যুর পর আগ্রাসী হয়ে উঠে রাজ্জাক। শুরু করে শিক্ষিকা সখিনার উপর উৎপীড়ন। দীর্ঘ বহু বছর মামলা নিম্ম আদালত হতে উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায় নিষেধাজ্ঞা, অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, উচ্ছেদ, রায় কিছুতেই যেন সুরাহা হবার নয়। জঠিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রাজ্জাক। রাজ্জাকের ঘরে কোন পুত্র সন্তান না থাকায় অনায়াসে অভিভাবকের দায়িত্বে শ্যালক জয়নাল যেন কিছুতেই ছাড়বে না এবার শিক্ষিকা সখিনাকে। ধীরে ধীরে গড়ে তুলতে থাকে এলাকায় কিছু দুস্কৃতিকারী আবদুল মান্নান, সাহাদ হোসেন, কবির শেখ, মাহাবুল আলম, সাদ্দাম হোসেন, বাদশা মিস্ত্রি, কালু মিয়া, শাহজান, রেজাউল, জাকির, রফিক, খলিল মাঝি সহ আরো অনেকে। এবার তাদেরকে লেলিয়ে দেয় শিক্ষিকা সখিনার উপর।
গত ৫ মে ২০২০ রোজ মঙ্গলবার রাত ৮.৩০ টায় সখিনার বসতঘরে প্রবেশ করে ইট, লাঠিসোটা, দা, কুড়াল দিয়ে ভাংচুর শুরু করে। শিক্ষিকা সখিনা প্রতিবাদ করলে শ্যালক জয়নাল তার দৃস্কৃতিকারী বাহিনী নিয়ে অতর্কিত ভাবে হামলা করে।
0 Comments