রমজান মাসেও চলছে নাঃগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশের লাগামহীন চাঁদাবাজি


 শহীদুজ্জামান আতিফঃ

নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক  পুলিশের অভিনব কায়দায় বিভিন্ন প্রকার গণপরিবহন, বাস, ট্রাক, লেগুনা, সিএনজি, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও মিশুক রিক্সা হতে পবিত্র রমজান মাসেও চাঁদা আদায় অব্যাহত রয়েছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এই চাঁদাবাজিতে রাজপথে পুলিশ সোর্সের পাশাপাশি পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদেরও দেখা যায় প্রকাশ্য দিবালোকে বাস-ট্রাকের ন্যায় ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক বা অটোরিকশা হতে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা আদায় করতে। 

প্রতিবার ৫০ টাকা হতে শুরু করে রেকারের নামে ১৫ শত থেকে ২ হাজার টাকা অমানবিক ভাবে অত্যাচার করে হাতিয়ে নিচ্ছে। অপরদিকে বিশেষ সূত্রমতে জানা যায়, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মাসহারার ভাগাভাগি করলেও চাঁদার দায় নিতে কেউ রাজি নন। 

সৃত্রমতে আরও জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশের কাছে যেন পুরো জেলার সকল যানবাহনই দায়বদ্ধ বা বন্দি। তার কারন শহরে প্রবেশদ্বারে সড়কের মোড়ে রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই পদবির কিছু পুলিশের নামধারী ও পোশাকধারী চাঁদাবাজ। যাদের দায়িত্ব সকাল হতে রাত পর্যন্ত শহরের যানযট নিরসন করা। 

কিন্তু তারা একজন সৎ পুলিশের কর্মের দায়িত্ব ও সততার কথা ভুলে গিয়ে প্রতিদিন সকাল ৬টা হতে বেলা ১টা পর্যন্ত আবার অনেক সময় রাত ৮ টা পর্যন্ত এই কর্মকাণ্ড শহরের চাষাড়া, খানপুর মেট্রোহল মোড়, কালিরবাজার, ২নং রেলগেট, ১নং রেলগেট মোড়, মন্ডলপাড়া, কলেজরোড মোড়, পঞ্চবটির মোড়, জেলা পরিষদ মোড় সহ বিভিন্ন সড়কে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি করছে।

বিশেষ করে ইজিবাইক, মিশুক ও অটোরিকশা হতে গড়ে ২০ টাকা হতে শুরু করে কথিত রেকার বিলের নামে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। পুলিশের দাবিকৃত এই চাঁদার টাকা কোন অটোরিকশা চালক দিতে অনিহা করলে তার উপর হচ্ছে অমানবিক অত্যাচার। 
 
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই শফিক, এটিএসআই বাশার, এটিএসআই হাসান, কনেস্টবল রুবেল, কনেস্টবল শহীদুল প্রমুখ পুলিশ সদস্যরা ডিউটির পরিবর্তে প্রতিদিন করছে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি। সাধারণ জনমত ১ জন ২৫-৩০ হাজার টাকা বেতনভূক্ত পুলিশের কর্মকর্তা কিভাবে ৩- ৪ জন সোর্সকে বেতন দিয়ে চাকুরী দিতে পারে ? ঐ পুলিশ সদস্য'র দূর্নীতি সম্পর্কে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে নালিশ বা অভিযোগ করলেও কোন লাভ হয় না। কারন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অধিকাংশ কর্মকর্তারাই এই পরিবহণ হতে আদায়কৃত হালুয়া- রুটির ভাগাভাগি করে বলেও জানাযায়। 

সম্প্রতি পবিত্র রমজান উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মাননীয় সাংসদ আলহাজ্ব একেএম সেলিম ওসমান এমপি নগরীর যানজট নীরসনে ১০ লক্ষ টাকা অনুদান জেলা পুলিশকে দেয়। আর এই ১০ লাখ টাকা নিয়ে শহরের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশের বিশেষ অভিযান বাস্তবায়নে ১শ জন যানজট নীরসনকর্মী বা কমিউনিটি পুলিশ অস্থায়ী নিয়োগ করে। কিন্তু সরজমিনে দেখাযায় ট্রাফিক পুলিশের সাথে যোগসাজসে ঐসব কমিউনিটি পুলিশরাও সড়কে চাঁদাবাজি করছে।

বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের রেকারের দায়িত্বে থাকা এটিএসআই শফিক, বাশার, হাসান ও কনেস্টবল রুবেল এবং শহীদুলের প্রতিদিন জনপ্রতি প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা ইনকাম করে নিচ্ছে। আর এই চাঁদার টাকা উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে হালুয়া-রুটির ভাগাভাগি করে এরা।

ভাগ পাওয়ার কারনে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দেখেও যেন কেউ দেখছে না। এ ব্যাপারে সাধারণ জনগণের নগরীতে চলাচলে গুনতে হচ্ছে ডবল রিক্সা ভাড়া। 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশের এএসপি জায়েদ পারভেজ মুঠোফোনে বলেন, "আমি উল্লেখ্য বিষয়ে তদন্ত করে দেখবো। যদি আমাদের কোন পুলিশ সদস্য'র এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"

Post a Comment

0 Comments