চিলমারী ব্রক্ষপুত্র নদে অনুষ্ঠিত হলো অষ্টমীর স্নান


 ফরহাদুল ইসলাম ,স্টাফ রিপোর্টারঃ


কুড়িগ্রামের প্রাচীনতম নৌ-বন্দর চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উত্তরবঙ্গের সর্ব বৃহৎ অষ্টমী স্নান শেষ হয়েছে।শনিবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ১১টার মধ্যে স্নানের উত্তম সময় ছিল। তাই এ সময়েই স্নান সেরে নেন অধিকাংশ পুণ্যার্থী। ব্রহ্মপুত্রের স্রোতে পাপ-পঙ্কিলতা ভাসিয়ে নিজ আবাসে ফিরতি যাত্রায় এখন পুণ্যার্থীরা।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ পুণ্যস্নান উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে স্নান সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করে।
চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র এলাকার রমনা ও পুটিমারী ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক লাখ পুণ্যার্থী স্নান করার উদ্দেশ্যে ব্রহ্মপুত্র পাড়ে সমাবেত হয়েছেন। ধর্মীয় রীতি মেনে তারা নিজেদের স্নান সম্পন্ন করেন।

স্থানীয়দের মতে, প্রায় তিন থেকে চার লাখ পুণ্যার্থী সববেত হয়েছেন ব্রহ্মপুত্র তীরে। মেলা ও ব্রক্ষপুত্র স্নান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য মেলা স্থলে  বসানো হয় পুলিশের কন্ট্রোল রুম। দূর-দূরান্তের পুণ্যার্থীরা যাতে নিরাপদে রাত্রিযাপন করতে পারেন সেজন্য উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অষ্টমীর স্নান করে নিজেকে পবিত্র করেছেন এমন বিশ্বাস থেকে নিজের অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে নন্দিতা বিশ্বাস জানান, স্নান করার মাধ্যমে আমরা জীবনের পাপকে ধুয়ে পবিত্রতা অর্জন করি। স্রষ্টা এর মাধ্যমে আমাদের অতীতের পাপ থেকে মুক্ত করবেন, এজন্যই এসেছি।
গত সাত বছর ধরে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানে আসা গাইবান্ধা জেলার সুবাস চন্দ্র বলেন, ভগবান বাঁচায় রাখলে পরের বছর আবার আসবো। তবে আমরা চাই এখানে স্নান উৎসব সম্পন্ন করার জন্য স্থায়ী ঘাট ও আবাসনের ব্যবস্থা করা হউক।

ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা জানতে চাইলে শরমিলা সাহা নামে অপর এক পুণ্যার্থী জানান, প্রচুর লোকের সমাগমে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাতে কিছুটা হলেও শৃঙ্খলা বজায় ছিল। তবে অষ্টমীর স্নানের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার সার্বিক সুবিধা বাড়ানো হয়। উপজেলার স্কুল, মাদ্রাসা এবং কলেজগুলোতে পুণ্যার্থীদের রাত্রিযাপনের বন্দবস্ত করা হয়। তাদের নিরাপত্তার জন্য র‌্যাব, পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। এছাড়াও অনেক সেচ্ছাসেবী তাদের সেবায় নিয়োজিত ছিল বলে জানান এই নির্বাহী কর্মকর্তা।
প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টম তিথিতে চিলমারীর ব্রক্ষপুত্র নদের তীরে প্রাচীনকাল থেকে এই স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

Post a Comment

0 Comments