এক প্যাকেট ত্রাণের জন্য ওপরে হাত তুলে এভাবেই আকুতি জানায় সুনামগঞ্জের অসংখ্য বানভাসি মানুষ |
সুনামগঞ্জে নৌযান দেখলেই ত্রাণের আশায় ঝুঁকি নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন বানভাসি মানুষ। কেউ সাঁতার কেটে কেউবা গলাসমান পানিতে নেমেও নৌযানের কাছাকাছি চলে যাচ্ছেন। তবে বেশিরভাগই ফিরছেন খালি হাতে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ফিরছেন ত্রাণ না পাওয়ার বেদনা নিয়ে। সুনামগঞ্জ জেলার বেশিরভাগ এলাকায়ই এ অবস্থা দেখা গেছে।
‘স্যার, আমারে একটা প্যাকেট দিন। আমার ঘরে গলা পানি। খাবার না পেলে আমি মারা যাবো’—ঠিক এভাবেই কোস্ট গার্ডের বোটের সামনে এক প্যাকেট ত্রাণ নিতে এমন আকুতি করতে দেখা যায় ১০ বছরের শিশু জীবন মিয়াকে।
শুধু জীবন নয়, শিশু থেকে শুরু করে নারী, পুরুষ ও বৃদ্ধ সবাইকে দেখা গেছে ত্রাণের প্যাকেট পেতে আকুতি করতে। সুনামগঞ্জজুড়ে ত্রাণের জন্য এমন হাহাকার করতে দেখা গেছে।
প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়। ওইদিন রাতের মধ্যে ডুবে যায় জেলার ৮০ ভাগেরও বেশি এলাকা। সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতকের বেশিরভাগ চাল ছুঁয়েছে ঢলের পানি।
তালা দেওয়া অনেক দোতলায় গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনের তালা ভেঙে জীবন বাঁচিয়েছেন লাখো মানুষ। ভয়াবহ বন্যার তাণ্ডবে ঘরে থাকা ধান-চাল, জমিতে থাকা সবজি, পুকুরের মাছ সবই ভেসে গেছে।
বর্তমানে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও ঘরে খাবার নেই, বাইরে কাজ নেই। বেশিরভাগ দোকানপাট এখনো খুলতে পারেননি দোকানিরা। এ অবস্থায় জেলার বেশিরভাগ এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা গেছে। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সবাই মহাবিপদে পড়েছেন। হাওরে নৌযান দেখলেই ত্রাণের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা।
সদর উপজেলার বাসিন্দা ইমরান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এক প্যাকেট ত্রাণ পাওয়ার আশায় সকাল থেকে পানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি। নৌকা গেলেই ডাকছি। কিন্তু কেউ নৌকা ভেড়ায় না।’
সূত্রঃ জাগো নিউজ
0 Comments