হাইওয়ে পুলিশের সামনেই অনুমতি ছাড়া চলছে নিষিদ্ধ লেগুনা, নিরব টি আই শরফুদ্দিন


দৈনিক জাতীয়সহ স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরেও বন্ধ হচ্ছে না নিষিদ্ধ পরিবহন লেগুনা। হাইওয়ে পুলিশের টিআই শরফুদ্দিনের ভূমিকা নিরব। শিমরাইল মোড় থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে লেগুনা চলাচল করছে বেপরোয়া গতিতে। মহাসড়কে লেগুনা চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও হাইওয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করার কথা বলে শিমরাইল এক্সপ্রেস লিমিটেড ও কতিথ লেগুনা মালিক সমিতির নামে এসব লেগুনা থেকে মাসে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।

লেগুনা মালিক সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত প্রায় ২’শত যাত্রীবাহী লেগুনা চলাচল করছে। প্রতিটি লেগুনা থেকে দৈনিক চাঁদা আদায় করা হচ্ছে ৫’শ ৭০’টাকা করে। যার মধ্যে চিটাগাংরোডে লাইনম্যানের জন্য ৫০’টাকা, যাত্রাবাড়ীতে লাইনম্যানের জন্য ২০’টাকা, আর জিপি চাঁদা ৫’শ টাকা। এছাড়াও ষ্টিকার লাগানোর জন্য গাড়িপ্রতি মাসিক চাঁদা ১’হাজার টাকা, পুলিশ রিকোজিসনের নামে ১’হাজার টাকা। মোবাইল কোর্টের নামে প্রতি গাড়ী থেকে ৫০’টাকা। পরিসংখ্যান মতে ষ্টিকারসহ প্রায় ২’শত গাড়ি থেকে মাসে চাঁদার পরিমান দাঁড়ায় প্রায় ৪০’লাখ টাকা। লাইনে নতুন গাড়ি প্রবেশ করতে হলে সালামি দিতে হয় ১০’থেকে ২০’হাজার টাকা। সে হিসেবে সালামি বাবদ হাতিয়ে নেয় কমপক্ষে ২০’থেকে ২৫’লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে লেগুনা চলছে শিমরাইল এক্সপ্রেস লিমিটেড (এস,ই,এল) নামক কোম্পানির ব্যানার। সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার দায়িত্বে রয়েছেন ওই কোম্পানির এমডি হাসানুজ্জামান পরশ। যাত্রাবাড়ীতে কথিত লেগুনা মালিক সমিতির সভাপতি চাঁদাবাজ পলাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ মোল্লা ও লাইন ম্যান সাঈদ । যাত্রাবাড়ী এলাকায় চাঁদা আদায় করছে কাউসার, অনিক, শাহ-আলম ও নয়ন নামে চারজন। শিমরাইলে হাজী আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেট ও প্রিয়ম টাওয়ার(ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের) সামনে মহাসড়কে করা হয় লেগুনা স্ট্যান্ড। লেগুনার চালক ও হেলপার অধিকাংশই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাদের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স। বেশিরভাগ গাড়ি লক্কর-ঝক্কর। ঠিক নেই কাগজপত্র। নেই রুট পারমিট। শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ বক্সের সামন দিয়ে মহাসড়কে দিব্বি চলছে নিষিদ্ধ পরিবহন লেগুনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গাড়ি মালিক বলেন, গাড়ী প্রতি প্রতিদিন চাঁদা(জিপি)৪’শ ৫০’টাকা দিতে হয়। মাসিক মাসোহারা ১’হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে গাড়ির সামনে গ্লাসে ষ্টিকার লাগাতে। এটা বাধ্যতামূলক। ষ্টিকার না লাগিয়ে গাড়ি সড়কে চলাচল করতে পারেনা। করলে চালকদের মারধর, গাড়ি ভাংচুর ও আটকিয়ে রাখে সমিতির নেতারা। কথিত মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ মোল্লা ও সাঈদকে চাঁদার ৪’শ ৫০’টাকা দিতে দেরি হলে গাড়ী আটক করে চালক ও হেলপারকে মারধর করে।

কথিত লেগুনা মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ মোল্লার কাছে চাঁদার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে হয়। তাই এ চাঁদা আদায় করা হয়।

শিমরাইল মোড় ও সাইনবোর্ডে দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশের টিআই (প্রশাসন) শরফুদ্দিন নিজের দায় এরিয়ে বলেন সরকার চাইলে লেগুনা বন্ধ করে দিতে পাড়ে।

হাইওয়ে পুলিশের নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত সূত্রধর বলেন, কিছুদিন আগে লেগুনা বন্ধ করা হয়েছিল। জনবল সংকটের কারনে বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

0 Comments