নারায়ণগঞ্জের প্রান পুরুষ ও গন মানুষের নেতা নাসিম ওসমানের জন্মদিন আজ

 

নারায়ণগ‌ঞ্জের গণমানু‌ষের নেতা এবং প্রান পুরুষ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের চারবারের সাংসদ ও প্রয়াত জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমানের জন্মদিন আজ। ১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। একেএম শামসুজ্জোহা দম্পতির প্রথম সন্তান তিনি ছিলেন।


 


উল্লেখ্য, প্রয়াত নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের প্রয়াত ভাষা সৈনিক ও স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন, সাবেক এম এল এ, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহোচর ও  বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠার অন্যতম ব্যক্তিত্ব মরহুম একেএম শামসুজ্জোহা ও প্রয়াত ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহার বড় ছেলে এবং বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-৫ ও ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ও একেএম শামীম ওসমানের বড় ভাই। সেই সাথে তিনি ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে সব থেকে বেশি মেয়াদে নির্বাচিত ৪ বারের সংসদ সদস্য।


 


এদিকে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তখন নাসিম ওসমান পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের সকলের সাথে হত্যা করা হয়। তার আগের দিন ১৪ আগস্ট তিনি পারভীন ওসমানকে বিয়ে করেন। বিয়েতে শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামাল উপস্থিত ছিলেন। ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে নাসিম ওসমান নবপত্নীকে ফেলে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চলে যান। তিনি ঢাকায় প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর তিনি আবার ভারতে চলে যান এবং সেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তৎকালীন কাদের বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।



নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। নাসিম ওসমান প্রথমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার বাবা এ কে এম শামসুজ্জোহা ছিলেন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহচর। পরবর্তীতে নাসিম ওসমান বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে পড়েন। তিনি চার বার বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে ১৯৮৮৪, ১৯৮৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন।


 


নাসিম ওসমানের বাবা এ কে এম শামসুজ্জোহা ছিলেন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর আবার ১৯৭৩ সালে তিনি একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। নাসিম ওসমানের ছোট ভাই শামীম ওসমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য। তার মেঝো ভাই সেলিম ওসমান তার মৃত্যুর পর সাংসদ নির্বাচিত হন। নাসিম ওসমানের স্ত্রীর নাম পারভিন ওসমান। এই দম্পতির এক ছেলে ও দুই কন্যা আছে (আজমেরি ওসমান,  আইরিন ওসমান ও আফরিন ওসমান)।


 


২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য নাসিম ওসমানকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লিতে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি দেরাদুন যান। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থানকালে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি ২০১৪ সালে ৩০ এপ্রিল মারা যান। আজ ৩১ জুলাই শুক্রবার এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জম্মদিন উপলক্ষে তার আত্মার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

Post a Comment

0 Comments