নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি দাবী করায় মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ইউসুফগঞ্জ গ্রামের সবিতা রানী দাসের পরিবারে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও দোকান ভাংচুর করে পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে সবিতা রানী দাস সোনারগাঁও থানায় একটি লিখিতভাবে অভিযোগ জানান কিন্তু থানা পুলিশ তার লিখিত অভিযোগটি গ্রহণ না করায় নিরাশ হয়ে পড়েছে আহতদের পরিবার।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সবিতা রানী দাস জানান,
আমি সবিতা রানী দাস (৪৫), স্বামী সুনীল
চন্দ্রদাস, সাং ইউসুফগঞ্জ, ইউপি-মোগরাপাড়া, থানা-সোনারগাঁ, জেলা-নারায়নগঞ্জ, বিবাদী ১। হরি চন্দ্র দাস (৩৫), পিতা-মৃতঃ অমুল্য চন্দ্র দাস, ২। হারু চন্দ্র দাস (৩৪), পিতা-মৃতঃ নেপাল চন্দ্র দাস, ৩। মহাদেব (২০), পিতা-নারায়ণ চন্দ্র দাস, ৪। রঞ্জিত (২১), পিতা-সুশিল চন্দ্র দাস, ৫ উজ্জল (২২), পিতা-রাখাল চন্দ্র দাস, সর্ব সাং ইউসুফগঞ্জ, ইউপি-মোগরাপাড়া, থানা-সোনারগাঁ, জেলা-নারায়নগঞ্জদ্বয় সহ আরো অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জন বিবাদীরা আমাদের বসত বাড়ীর নিজেস্ব্য সম্পত্তির মধ্যে আমাদের পূর্ব পুরুষদের একটি পারিবারিক মন্দির আছে। আমাদের উক্ত মন্দিরকে কেন্দ্র করিয়া বিবাদীদের সাথে পূর্ব হইতে বিরোধ সহ মনোমালিন্য চলিয়া আসিতেছে। যার কারনে বিবাদীরা প্রায়ই আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনদের গালমন্দ করিয়া ভয়ভীতি সহ হুমকী দিয়া আমাদের পরিবারের উপর অত্যাচার নির্যাতন করিয়া আসিতেছে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরিয়া গত ইং-৩১/০৮/২০২২ তারিখ বেলা অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত বিবাদীগন সহ অজ্ঞাত নামা বিবাদীরা পরস্পর যোগসাজে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাহাদের হাতে থাকা ধারালো রামদা, ছোড়া, চাপাতি, এসএস পাইপ, লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়া বেআইনী জনতাবদ্ধে আমার বসত বাড়ীর সীমানার ভিতর অনধিকার প্রবেশ করিয়া অতর্কিত হামলা করে এবং আমাদের ঘর বাড়ীর দরজা জানালা ও বিভিন্ন পন্য সামগ্রী ভাংচুর করিয়া ক্ষতি সাধন করে। যার মূল্য-৩০,০০০/-টাকা। উল্লেখিত বিবাদীগন সহ অজ্ঞাত নামা বিবাদীরা আমাকে, আমার মেয়ে মিতু (২৫), দোলন (২৭), আমার ভাগিনার স্ত্রী ইতি (২৪) ও আমার ভাগিনা সোহাগ চন্দ্র বারই (৩০) দেরকে লাঠিসোঠা দিয়া এলোপাতারী ভাবে মারপিট করিয়া আমাদের সকলের হাতে, পায়ে পিঠে, মাথায় ও মুখমন্ডল সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা ও রক্তাক্ত জখম করে। ১নং বিবাদী আমার ঘরে থাকা নগদ ২০,০০০/- টাকা নিয়া যায়। আমি বাধা নিষেধ করিলে ১নং বিবাদী আমাকে টানা হেচড়া করিয়া আমার পরিহিত কাপড় ছিড়িয়া শ্লীলতাহানি করে। তখন আমার মেয়ে মিতু(২৫) ও আমার মেয়ে দোলন (২৭) আগাইয়া আসিলে ২ ও ৩নং বিবাদীদ্বয় আমার মেয়েদের পরিহিত জামা
কাপড় ধরিয়া টানা হেচড়া করিয়া মানহানি করে এবং ২নং বিবাদী আমার মেয়ে মিতুর গলায় থাকা ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্নের চেইন নিয়া যায়। যার মূল্য-৩৫,০০০/-টাকা। ৩নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাগিনা সোহাগ চন্দ্র বারই এর মাথায় কোপ মারিলে আমার ভাগিনা হাত দিয়া ঠেকাইলে ডান হাতের আঙ্গুল সহ তালু কাটা গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। আমার ভাগিনার স্ত্রী ইতিরানী বারই ডাক চিৎকার করিয়া ঠেকানোর চেষ্টা করিলে ৪ ও ৫ নং বিবাদীদ্বয় আমার ভাগিনার স্ত্রী ইতিরানী বারই এর পরিহিত জামা কাপড় ধরিয়া টানা হেচড়া করিয়া জামা কাপড় ছিড়িয়া ফেলে শ্লীলতাহানি করে এবং তাহার গলায় পরিহিত ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন নিয়া যায়। যার মূল্য-৩৭,০০০/-টাকা। আমাদের ডাক চিৎকার
শুনিয়া আশেপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীরা আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিয়া ভয়ভীতিসহ প্রাননাশের হুমকী প্রদান করে। স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয় স্বজনদের সহযোগীতায় আমিসহ সকল জখমীরা সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়া চিকিৎসা গ্রহন করি। চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকিয়া ও উক্ত ঘটনার বিষয়ে আমি আমার আত্মীয় স্বজনদের সাথে আলোচনা করিয়া থানায় গিয়ে লিখিতভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করি কিন্তু থানায় অভিযোগ গ্রহণ না করায় আমি ও আমার পরিবার নিরাশ হয়ে পড়ি। প্রশাসন যদি আমাদের মতো গরীব দুঃখী মানুষের পাশে না থাকে এবং ন্যায় বিচার না করেন কোথায় যাবো আমরা, কোথায় গেলে পাবো ন্যায় বিচার! অতি ভারাক্রান্ত মন নিয়ে কথাগুলো বললেন সবিতা রানী দাস।
0 Comments