একাধিক কন্যা সন্তানের মা হওয়ায় নির্যাতিত গৃহবধূর জীবনের সমাপ্তি রহস্যজনক মৃত্যু দিয়ে


সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ-



একের পর এক কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় গৃহবধূর উপর নির্যাতন চালাত স্বামী সজীব সহ শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যগণ দাবি গৃহবধূ সোনিয়া আক্তার(২৬) এর বাবার বাড়ির স্বজনদের। তারি ধারাবাহিকতায় তিন কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সজীবের বিরুদ্ধে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া চৌধুরীপাড়া এলাকায় বুধবার ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে মৃত অবস্থায় সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রেখে পালিয়ে যায় স্বামী সজীব ও তার পরিবার। নিহত সোনিয়ার স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত সোনিয়া ও তার স্বামী সজীবের মধ্যে সাংসারিক ঝামেলা চলছিল। প্রায় সময় নেশা দ্রব্য সেবন করে বাড়িতে ফিরত। মাদক সেবন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করলে মারধর সহ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ভয়-ভীতি দেখাতো। সাংসারিক কলহের প্রধান কারণ ছিল পর পর তিনবার কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় স্ত্রী সোনিয়ার প্রতি স্বামী সজীবের মন ক্ষুন্নতা। ছেলে সন্তান জন্ম না দেয়াতে তার উপর একাধিকবার আক্রমণও করা হয়েছে। নিহত সোনিয়া শ্বশুর বাড়ির সম্মান ও সংসার টিকিয়ে রাখার ভয়ে মুখ বুজে সব নির্যাতন সহ্য করে আইনি সহায়তা গ্রহণ বা মামার বাড়ির স্বজনদের কিছু জানায়নি। তাছাড়া আগের রাতে অর্থাৎ গত ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয় ও সোনিয়াকে রাতে অমানবিক নির্যাতন চালায় স্বামী সজীব। অতঃপর সে নির্যাতনের সমাপ্তি হয় সোনিয়াকে হত্যার মধ্য দিয়ে। খবরটি সোনিয়ার স্বজনদের কাছে পৌঁছলে তাৎক্ষণিকভাবে সোনারগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে উপস্থিত হয়। ইতিমধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সোনিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা দেয়। এমতঅবস্থায় স্ত্রী সোনিয়ার স্বামীর বাড়ির লোকজনের উপস্থিতি না দেখে সন্দেহ হলে সোনারগাঁ থানায় মামলার জন্য উপস্থিত হন বাবার বাড়ির স্বজনরা। সোনারগাঁ থানা পুলিশ হত্যা মামলা নিতে তাল বাহানা করছে বলে সাংবাদিকদের জানান সোনিয়ার পিতা আব্দুল জলিল। এছাড়াও পিতা আব্দুল জলিল জানান, আমার মেয়ে সোনিয়ার মৃত্যু কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়। এটা চক্রান্ত মুলক একটি হত্যাকান্ড। কিন্তু স্বামীর বাড়ির লোকজন আত্মহত্যার গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। যা কিনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাছাড়া ঘটনার পর পর স্বামী সজীবসহ শ্বশুরবাড়ির অনেকেই পলাতক। এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূ সোনিয়া আত্মহত্যা করেছে না হত্যার শিকার হয়েছে, আপাতত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

Post a Comment

0 Comments