নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ডিসি, এসপি, র্যাব পুলিশ প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন সমন্বয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে নগরে সকল কিছু’র উন্নয়ন সম্ভব। ফুটপাত উচ্ছেদ, অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড, অবৈধ ডায়গণেষ্টিক সেন্টার, অটোরিক্সা নিয়ম মেনে অভিযান চালাতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও গলিগুলো তুলনামূলক সরু অবস্থা রয়েছে।
ওখানে মাঝে মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীও যেতে সমস্যা পড়তে হয়। অপরদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর অঞ্চলের প্রধান প্রধান সড়ক সহ গলিগুলোর সড়ক অনেক বড় বড়। শহরের জায়গা অল্প, কোন গরীব মানুষকে উচ্ছেদ করে রাস্তা বড় করা সম্ভব নয়। সরকার যদি অধিগ্রহণ করে সড়ক বড় করা সম্ভব। অটো রিক্সা পুরোভাবে বন্ধ করা যাবে না। দুই সিটি এলাকায় ইতিমধ্যে অটোরিক্সা নিয়ম মেনে অনুমতি দিয়েছে। আমরাও সেই নিয়মে দেখতে পারি।
বুধবার ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সঞ্চালয়নায় উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) আনোয়ার হোসেন, র্যাব-১১ কমান্ডিং অফিসার লেফরেন্ট কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা, সিভিল সার্জন ডাঃ এ এফ এম মুশিউর রহমান, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ আমির খসরু, প্যানেল মেয়র-১ আব্দুর করিম বাবু, কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা, কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম ছক্কু, মোখলেছুর রহমান, মনোয়ার বেগম, তিতাস গ্যাসের ম্যানেজার প্রকৌশলী ইমরান, শিক্ষা প্রকৌশলী নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পা সাহা প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে নিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ করা পর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা ঘোষনা দিয়েছেন। আগে আমাদের স্মার্ট হতে হবে।
রাজনীতি পরিস্থিতি নিয়ে মেয়র আইভী বলেন, ৬৪টি জেলায় প্রতিযোগিতা হয় এই নারায়ণগঞ্জেও সেই প্রতিযোগিতা থাকবে। এভাবে সকলকে নিয়ে নগর উন্নয়ন করতে হবে। দলের উন্নয়নের কথা বলব, দলের কথা বলব, আমি উন্নয়ন করে যাবো। আমরা সবাই যদি সমাধান না করি তাহলে জনগণ কোথায় যাবে? তারা আমাদের ভোট দিয়ে এই চেয়ারে বসিয়েছে।
পুলিশের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, জেলার সাবেক এসপি হারুণ আমলে ফুটপাত, অটোরিক্সা, যানজট ও ট্রাক ষ্ট্যান্ড নিয়ম মেনে চলেছিলো। এখন কেনো সম্ভব হচ্ছে না? ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষ সুন্দরভাবে চলাচল করেছে। জেলা পুলিশের তো রেকার রয়েছে। আমাদের সিটি কর্পোরেশনের রেকার নেই। সে কারণে ট্রাফিক পুলিশের রেকার রাস্তা বুঝে কাজ করলে যানজট শহরে থাকে না। ট্রাফিক তো আপনাদের অধিনে, এমপি সেলিম ওসমান আপনাদের অনেক কিছু করেছে। উচ্ছেদে সময় আমাদের কোন ম্যাজিষ্ট্রেট পুলিশ থাকে না।
মেয়র আইভী বলেন, সরকারি হাসপাতালের সামনে এত ডায়গণেষ্টিক সেন্টার কিভাবে থাকে? সরকারী কোন নিয়মে তারা এভাবে ডায়গণেষ্টিক সেন্টার গড়ে তুলেছে। সরকারি নিয়মে এত ডায়গণেস্টিক সেন্টার থাকতে পারে না। সেগুলো ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকা আমলে অনেক ডায়গণেস্টিক সেন্টারকে সীলগালা করেছি। আগে সরকারী হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালিয়ে দালাল চক্র সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছিলো র্যাব। সে জন্য তাদেরকে ধনবাদ জ্ঞাপন করছি।
সিটি কর্পোরেশনের ৩ মাস পর পর নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সমাপনী বক্তব্যে মেয়র আইভী বলেন, নগর যেন সকাল থেকে পরিচ্ছন্ন থাকে। এর জন্য ডিসি এসপি প্রশাসন ও কাউন্সিলরদের সহযোগিতা চাই। সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন দূরত্ব রাখার জন্য এক প্রভাবশালীর অধিনস্থ সাংবাদিকরা পত্রিকায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিউজ প্রকাশ করে। যেগুলো আমি বলি না, সেগুলোকে হাইলেট করে ২০/২৩টা পত্রিকা ছাপা হচ্ছে। এগুলো নিয়ে আপনারা সর্তক থাকবেন।
কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা বলেন, শহরের পুরাতন কোর্ট, হাইস্কুল ও ফলপট্টি সড়কটি একদিকে হকার অপরদিকে বন্ধন পরিবহন বাসের লাইন সারি হয়ে থাকে। এমনকি র্যাব অফিস ও ডাকঘরের সামনে একাধিক হকার বসিয়ে যানজটের সৃষ্টি করতে একটি মহল। এক হকার বসিয়ে আরেক হকার উঠিয়ে অর্থ উপার্জন করে যাচ্ছে। এতে আগত বাড়ীওয়ালাদের চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।
0 Comments