স্ত্রী-সন্তান থাকতেও তারা হিজড়া

 





পরনে শাড়ি বা থ্রি পিস, মুখে মেকাপ, চোখে কাজল, ঠোটে লিপিস্টিক। দেখে বোঝার উপায় নেই তারা ছেলে না মেয়ে। তাদের তৃতীয় লিঙ্গর মানুষও বললেও ভুল হবে। কারণ তাদের রয়েছে স্ত্রী-সন্তান। তবুও তারা হিজড়া। প্রতিদিন ৬০০ টাকার বিনিময়ে হিজড়া সেজে প্রতারণা করে আসছে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে। এবাবে হিজড়া সেজে প্রতারণার মাধ্যমে চাঁদাবাজির উৎপাত বেড়েই চলছে রাজধানীতে।

এছাড়াও ব্ল্যাক মেইলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ফায়দা হাসিল করছে তারা। রাস্তাঘাটে, বাস-ট্রেনে, যেখানে সেখানে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। অনেক সময় দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে বাসা বাড়িতে ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। হিজড়া সেজে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেফতারের পরে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. হোসেন ওরফে শিলা হিজড়া (২৭), মো. হৃদয় ওরফে পিয়া হিজরা (১৮), আমিনুল ইসলাম ওরফে ঐশী হিজরা (২১), মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে জয়া হিজরা (২৭), মো. ইয়াহিয়া ওরফে মৌরি হিজরা (৩০), মো. নয়ন ওরফে নিশি হিজরা (২০), মো. বেলাল ওরফে কেয়া হিজরা (২৮) ও মিজানুর রহমান ওরফে চায়না হিজরা (২০)। পুলিশ জানায়, গ্রেফতার ব্যক্তিরা সবাই পুরুষ। কিন্তু তারা হিজড়া সেজে নগরীর বিভিন্নস্থানে চাঁদাবাজি করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে।

মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন সময়ের আলোকে বলেন, শনিবার দুপুরে রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে তাওহীদ আলী নামে এক মোটরসাইকল আরোহীর গতিরোধ করে টাকা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ধস্তাধস্তি করে তার কাছ থেকে ২০০ টাকা কেড়ে নেন। পরবর্তী সময়ে ভুক্তোভোগী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করলে মিরপুর মডেল থানা পুলিশের একটি দল তাদের আটক করে। এ ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। সে মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরেই হিজরা সেজে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে আসছেন। পাপ্পু হিজড়া তাদের গুরুমাতা হিসেবে আছে। এই পাপ্পু দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ঢাকায় আনেন এবং হিজরা সাজিয়ে চাঁদাবাজি করান। বিনিময়ে প্রতিজনকে প্রতিদিন ৬০০ টাকা করে দিতে হয়। গ্রেফতারকৃতদের কারও বাড়ি লক্ষ্মীপুর, কারও বাড়ি সিরাজগঞ্জ, কারও বাড়ি পাবনা, কাউকে আবার আনা হয়েছে ময়মনসিংহ থেকে। তাদের কয়েকজন বিবাহিত এবং সন্তানও আছে। কিন্তু তবুও তারা হিজরা সেজে চাঁদাবাজি করছিলেন।

Post a Comment

0 Comments