কেন্দ্রঘোষিত নারায়ণগঞ্জ বিএনপির আয়োজিত গণসমাবেশে ঢাকার সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ও বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের এক বক্তব্যে উত্তপ্ত নারায়ণগঞ্জ রাজনৈতিক অঙ্গন। এরই মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সভা ডেকে এ নেতাকে নারায়ণগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১৮ সেপ্টেম্বর ফতুল্লার ভুঁইগড় এলাকার পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় এ গণসমাবেশ করা হয়। সেখানে অতিথির তালিকাতে না থাকলেও এসেছিলেন ইশরাক। তিনি মঞ্চের নিচে থাকলে নেতারা মাইকে ডেকে মঞ্চে উঠান।
বক্তব্যে শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে ইশরাক হোসেন বলেন, “নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের কুখ্যাত অনেকে রাজনীতি করেন যারা আমাদের নানা সময়ে ভয়ভীতি দেখান। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর ওই নেতা বোরকা পরিহিত অবস্থায় দেশ ছেড়েছিল। এবার সে সুযোগও পাবে না। প্রত্যেকটি অপরাধের শাস্তি হতে হবে। আমরা এখন ঢাকাতে আন্দোলন করছি। আগামীতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ মিলে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটানো হবে। আমি এখানে আমন্ত্রিত ছিলাম না। আমি শুধু একজন কর্মী হিসেবে এখানে এসেছি। আমি নিচে বসলেও আমাকে মঞ্চে ডেকে এনে সম্মানিত করা হয়েছে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে বাসায় অবরুদ্ধ করে রেখেছে সরকার। আমাদের নেত্রীকে সুরক্ষা দিতে না পরালে নিজেদের কী সুরক্ষা দেব? কোন মুখে আমরা বলব গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব? এই প্রশ্নটা আপনাদের কাছে রেখে গেলাম।’’
ইশরাকের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা তাকে মাদকাসক্ত, ডান্স মাস্টার হিসেবে অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি তাকে নারায়ণগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এছাড়া তার মতোন আর কোনো বিএনপির নেতা এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখবেন তাকে নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ শক্ত হাতে প্রতিহত করবে বলে হুশিয়ারী দেন তারা। তবে তাদের এমন বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।
ইশরাককে তিরষ্কার করে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের তিন নেতা। বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শুভ রায় বাকের বলেন, ইশরাক সাহেব সেদিন বক্তব্যে দেখলাম হাউমাউ করলেন। বক্তব্য দেওয়ার নামে সে কিছুক্ষণ ড্যান্স দেখালেন। তিনি বক্তব্যে পাশাপাশি সে নৃত্য দেখালেন তা দেখে মনে হয় তিনি কোনো নৃত্য গ্রুপের ড্যান্স মাস্টার। তা না হলে তিনি কিছুতে হয়তো আসক্ত ছিলেন। তার টপিক একটা বলে আরেকটা। কিসের মধ্যে সে কি বলে। শাড়ী-বোরকা কি নিয়ে আসলো। আরে ভাই আপনার পিতার কাহিনী আমরা সবাই জানি। শুধু আমরা না নারায়ণগঞ্জবাসী জানে, সারাদেশ জানে। ইশরাক ভাই আপনি যাই বলেছেন আপনি মনে কইরেন না, আপনি স্মার্ট কথা বলেছেন। আপনার কীর্তিকলাপও আমরা সব জানি। আপনার সব নীলা আমাদের জানা আছে। বকবক কররে আপনার এলাকায় গিয়ে করেন। সব জায়গায় নিজের এলাকা মনে কইরেন না। ভুলে যাবেন না এটা নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জের মাটিতে অনেক বড় বড় পাগল ইতিপূর্বে ভালো হয়ে গেছে। সর্বশেষ তিনি বলেন আপনাদের দমাতে নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ একাই যথেষ্ট।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাঈল রাফেল জানান, আমাদের নারায়ণগঞ্জে স্বাধীনতা বিরোধী একটি কর্মসূচি হয়েছে যেখানে দেখতে পেলাম কিছু অতিথি পাখি যাদের ঢাকা থেকে ভাড়া করে আনা হয়েছে। ভাড়া করা এইসব অতিথি পাখির কোনো খাবার নাই। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি কখনো বোরকা পড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় না। আপনার পরিচয় সাদেক হোসেন খোকার ছেলে। এছাড়া আপনার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। আপনি পেটের দুধ খেয়ে রাজনীতি করতে এসেছেন, তৃণমূল থেকে না। আপনার কথা বলার স্টাইল দেখলে মনে হয় আপনি সবসময় মাদকাসক্ত থাকেন। মাদক সেবন করে আপনার কথা বলতে হয়। আপনার মতো নষ্ট প্রকৃতির মানুষ যদি আর কখনো নারায়ণগঞ্জের মাটিতে পারা দেন তাহলে আপনাতে শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে। আপনাকে নারায়ণগঞ্জে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম।
মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সম্রাট জানান, চরিত্রহীন ইশরাককে বলতে চাই তার ভাগ্য ভালো নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ সভ্য। তাকে যদি সেদিন প্রতিহত করতাম তাহলে সে বোরকা পড়ে পালানোর সময় পেতো না। এই দলের কাজই লুটপাট করে। এরপর যদি তার মতো আর কেউ এভাবে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে তাহলে মহানগর ছাত্রলীগ তাদের ছাড় দিবে না।
মহানগর ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক রাসেল প্রধান বলেন চরিত্রহীন ইশরাককে বলতে চাই তার ভাগ্য ভালো নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ সভ্য। তাকে যদি সেদিন প্রতিহত করতাম তাহলে সে বোরকা পড়ে পালানোর সময় পেতো না। এই দলের কাজই লুটপাট করে। এরপর যদি তার মতো আর কেউ এভাবে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে তাহলে মহানগর ছাত্রলীগ তাদের ছাড় দিবে না। মাদকাসক্ত ইশরাক কে বলতে চাই নারায়ণগঞ্জ কে উত্তপ্ত করবেন না যদি জনগণ উত্তপ্ত হয় তাইলে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না
0 Comments