সংবাদ বিজ্ঞপ্তি : নির্বাচন অফিস থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন সংগ্রহ করার গুঞ্জনে বিস্ময় প্রকাশসহ এমন মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। এমন তথ্য যারা ছড়াচ্ছে তারা সরকারি দলের কতিপয় গোষ্ঠীর যোগ সাজশে তা ছড়াচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে নির্বাচন অফিস থেকে গিয়াসউদ্দিন ও তার ছেলে কায়সার রিফাত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, গতকাল বিকেল থেকে এমন খবর চাউর হয়। খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তকর বলে তিনি মন্তব্য করেন। তার দাবি কতিপয় গোষ্ঠীর সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এটি।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের দলের সিদ্ধান্ত একটাইÑ একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পদত্যাগ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এবং এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা অতন্দ্র প্রহরীর মত রাজপথে থাকবো। এর বাইরে কোনো লোভে জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ^াসী নেতাকর্মীরা গা ভাসাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই রাজনৈতিক গেম খেলার চেষ্টা করছেন। সেই গেমের অংশ হিসেবে অনেকেই ছড়িয়ে দিচ্ছেন আমি নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো! এমন প্রচারণা প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক কতিপয় ব্যক্তিদের দুরভিসন্ধি ছাড়া আর কিছু নয়। আমাকে এবং আমার পরিবারকে হেয় করার উদ্দেশ্যেই এমন তথ্য ছড়ানো হচ্ছেÑ যা ডাহা মিথ্যা। কোনো একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে বলছিÑ আমি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এবং সাবেক সংসদ সদস্য। আমার দলের সিদ্ধান্তের বাইরে আমি কেন, আমাদের দলের প্রতি আনুগত্য কোনো নেতা-কর্মীই যাবে না। যারা এ পর্যন্ত দলের বাইরে গিয়েছে তারা কখনই বিএনপির অনুরাগি ছিলেন না, এক কথায় তারা স্বার্থপর, সুবিধাভোগি। আমি তাদের দলে গা ভাসাতে চাই না। কেননা, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার জন্য রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছি। বর্তমানে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি।’
সাবেক এই সাংসদ বলেন, ‘কতিপয় গোষ্ঠী বা ব্যক্তি দলের মধ্যে আমাকে হেয়-প্রতিপন্ন করার জন্য আমার নামে নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার চেষ্টা করে থাকতে পারে বা করেও থাকতে পারে। এমন ঘটনা যদি ঘটে থাকে বা সামনে ঘটে তাহলে তা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বৈ অন্য কিছু নয়। এসবের সঙ্গে কখনই আমি বা আমার পরিবারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বা থাকবেও না। আমি এবং আমার পরিবার বিএনপি ও এই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।’
তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের এমন কোনো থানা নেই যে থানাতে আমি এবং আমার সন্তানেরা রাজনৈতিক, গায়েবী মামলার আসামি হইনি। একেরপর এক মামলা দিয়ে আমাদের কাবু করার চেষ্টা করা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই যখন এই ফ্যাসিস্ট সরকার বা এই সরকারের দোসররা কামিয়াব হতে পারছে না তখনই প্রপাগন্ডা ছড়াচ্ছে। নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ আর গায়েবী মামলা একই সুতোয় গাঁথা। এমন অপপ্রচারের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই মৃত্যু ব্যাতিত এক দফা আন্দোলন থেকে আমিসহ আমার সন্তানদের কেউ সরাতে পারবে না। সামনে আমাদের জয় নিশ্চিত, ইনশাল্লাহ।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও এর সহযোগি সকল সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যে যার অবস্থান থেকে এক দফা আন্দোলন কর্মসূচি আরও তীব্র করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। সামনে কঠিন পরীক্ষা। আমাদেরকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবব্ধভাবে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। মনে রাখতে হবে, আমাদের ঐক্য এখন সব থেকে বেশি প্রয়োজন। এবং লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদেরকে অনেকেই অনেকভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’
0 Comments