নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জে আগে এক নিষিদ্ধ পল্লী ছিল। তার জন্য আমরা অনেক লজ্জিত থাকতাম। আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করা হতো যে, এক ব্যবসায়ীক শহরে কিভাবে এমন ঘৃণ্য কর্মকান্ড হয়। নিষিদ্ধপল্লিতে ৪ হাজারের মতো নারী জাড়িত ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানাই, যার ফলে আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে নিষিদ্ধপল্লী উচ্ছেদই নয়, তাদের পুনর্বাসন করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু ভালো কাজ করা আরও বাকি আছে। নারায়ণগঞ্জকে আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর করতে আমাদের কাজ করা জরুরি। তাই আজ আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমার কাজে আপনাদের সাহায্য চাই।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনের এক রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, ভালো কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই। আল্লাহ রাসূল ভালো কাজ করতে বাধার সম্মুখিন হয়েছেন। আমি তো কেবল আল্লাহর বান্দা। আমি এবার নারায়ণগঞ্জে একটি কাজ করতে চাই। তা হলো নারায়ণগঞ্জ থেকে মাদক-সন্ত্রাস-ইভটিসিং নির্মূল করবো। নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি এখন অনেকটা এরকম যে, রাতে প্রয়োজনে আমাদের ঘরের ছেলেরা বেরুতো পারলেও মেয়েরা পারছে না। মেয়েদের মা-বাবা বলেন, বাইরে নিরাপদ না। বাইরে ইভটিসার আছে, সন্ত্রাসীরা আছে, মাদকাসক্তরা আছে। বেরুলেই বিপদ হবে। আমাদের নারায়ণগঞ্জ কেন এমনটা থাকবে? সিঙ্গাপুর, আমেরিকার মতো দেশে রাতে মেয়েরা অনায়াসে বেরুতে পারে। আমাদের নারায়ণগঞ্জকে কেন এমন করা সম্ভব হবে না? আমাদের একসাথে মিলে কাজ করতে হবে। এসব সমস্যা মূলেই আছে মাদক। মাদক থেকে নেশাগ্রস্ত, তা থেকে ইভটিসিং-চাদাবাজি ও শেষে সন্ত্রাস কাজে লিপ্ত হওয়া এই ধারায় এই সমস্যা বাড়ছে। বাড়িতে একটা বাচ্চা মাদকে জড়ানো মানে বাড়িটা দোযখে রূপ নিল। নারায়ণগঞ্জ থেকে এই মাদক, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ইভটিসিং দূর করবো।
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর কাছে কমিটমেন্ট করেছি, মাদক নির্মূল করতে হবে। আমি একটি ক্লিন নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই। আমি বোমা হামলা থেকে বেঁচে গেছি হয়ত এ কাজের জন্যই। একটা সংগঠন করা হবে যার নাম হবে প্রত্যাশা। এতে সকল শ্রেণীর মানুষ যেমন শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, ব্যাংক কমকর্তা, ছাত্র-ছাত্রী এক সাথে কাজ করবেন। প্রত্যেক ওয়ার্ডে এই সংগঠন থাকবে। যদি হাজার হাজার মানুষ মিলে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই তবে কে ঠেকাতে পারবে। সংগঠনে আমাদের প্রধান সদস্যরা হবে তরুণরা, যুবকরা।এমন এক সমাজ গড়তে হবে যাতে ঘর থেকে মেয়ে রাত ১১টায় যাতে বেরুলেও নিজেকে নিরাপদ অনুভব করতে পারে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি কাজ করবো, সাথে আপনারাও আপনাদের দায়িত্ব পালন করুন। একটা সুন্দর সমাজ গড়তে আসুন আমরা সবাই মিলে কাজ করি। সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ যদি একসাথে মিলে কাজ করি, আমি বিশ্বাস করি এক মাসের মধ্যে মাদক নারায়ণগঞ্জ থেকে নির্মূল হবে। এতে কোন রাজনীতি নাই, ক্লিন নারায়ণগঞ্জ গড়তে সবার সাহায্য চাই। ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু অল্প সংখ্যক খারাপ মানুষের জন্য ৯০ ভাগ মানুষ বিপাকে থাকে। আমি মাদক নির্মূলে আল্লাহ ছাড়া কারও সাথে আপোষ করবো না। আপানদের মাধ্যমে আমি মেসেজ পৌঁছুতে এসেছি।
0 Comments