ভোরের লিখা নিউজ ঃ
জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়, বিশেষত মুসলমানদের ওপর চীন সরকারের আচরণকে সম্প্রতি ‘গণহত্যা’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরো কয়েকটি দেশ। বিশ্বব্যাপীও বেইজিংয়ের উইঘুর নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এরই মাঝে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে বিকল্প উপায়ে কূটনীতি শুরু করেছে বেইজিং। তারা মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর মাধ্যমে প্রচার করতে চাচ্ছে যে, উইঘুরে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে না এবং সেখানে সংখ্যালঘুরা স্বাধীনভাবে সকল কাজ করতে পারছেন!
বুধবার দ্য ডিপ্লোম্যাট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ২৬শে মার্চ চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিজিটিএন একটি রিপোর্ট করেছে – যেখানে বেইজিংয়ে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মঈনুল হকের একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়েছে। তাতে পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেন: জিনজিয়াং প্রদেশে চীন সরকার কর্তৃক সহিংসতার সামান্যতম প্রমাণও আমি এখনো দেখিনি! উইঘুর মুসলমানদের দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছে এবং তারা স্কুলে যাওয়ার অনুমতিসহ স্বাধীনভাবে ধর্মও পালন করতে পারছে!
জিনজিয়াং সফর করেছেন বেইজিংয়ে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতও। সেখান থেকে ফিরে তিনি বলেন: এখানে কোনো ষড়যন্ত্র নেই, বরং কিছু সত্যতা আছে। সত্যটা হলো – জিনজিয়াংসহ প্রায় সর্বত্র চীন উন্নয়ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। কিন্তু কিছু লোক এটা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। তারা যে কোনোভাবেই হোক, চীনকে থামাতে চায়।
বলা বাহুল্য, তাদের এ মতামত অন্যান্য দেশের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা। ২২শে মার্চ মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এক ঘোষণায় চীনের দু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উইঘুরদের টার্গেট করে শারীরিক নির্যাতনসহ মানবাধিবার লঙ্ঘন।
একই মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক টুইটে বলেন: আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমালোচনা সত্ত্বেও জিনজিয়াংয়ে মানবতার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে চীন। পাশাপাশি তাদের এ অপরাধ বন্ধে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচারের দাবিতে বিশ্বব্যাপী আমাদের মিত্রদের সাথে দাঁড়াবো।
গত বছরের জুনে চীন-আরব সহযোগিতা ফোরামের এক ভার্চুয়াল সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে নেতারা বেশকিছু বিষয়ে একমত হয়েছেন। চলতি বছরের এপ্রিলে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ে সউদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, ইরান, ওমান ও বাহরাইন সফর করেছেন। সফর চলাকালীন বেইজিংয়ের শীর্ষ এ কূটনীতিক যে বিষয়গুলোর ওপর জোর দিয়েছেন, সেগুলো হলো – এ দেশগুলো চীনের চাহিদাকে সম্মান করবে, ঘরোয়া রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ এড়িয়ে চলবে এবং যখন পশ্চিমা সমালোচনার মুখোমুখি হবে, তখন চীনের প্রতি তাদের সমর্থন জানাবে। সূত্র: দ্য ডিপ্লোম্যাট।
0 Comments