শহীদুজ্জামান আতিফঃ
হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনায় তীব্র যানজটের মুখে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে প্রতিনিয়ত যাতায়াতগামী যাত্রী ও গণপরিবহন। ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাফিক জ্যামে যানবাহন এবং যাত্রীরা অচল হয়ে বসে থাকছে সাইনবোর্ড থেকে জালকুড়ি পর্যন্ত। নষ্ট হচ্ছে সময় এবং ব্যাহত হচ্ছে মানুষের সাধারণ জীবন ধারা। তবুও টনক নড়ছে না হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশ যখন সাইনবোর্ডের হাইওয়ে এবং জেলা উভয় সড়কের দায়িত্বে ছিল, তখনও যানজট ছিলো। কিন্তু তখন যাত্রীদের এতোটা ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়নি। জেলা ট্রাফিক বিভাগ সব সময়ই উভয় সড়কগুলোকে সমান গুরুত্ব দিয়ে যানযট মুক্ত এবং চলাচল উপযোগী করে রাখতো।
কিন্তু মহাসড়কের দায়িত্ব হাইওয়ে ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর হওয়ার পর থেকে লক্ষ্যনীয় ভাবে দেখা যাচ্ছে অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের আশা-যাওয়ার যানজট যেমন দিনে দিনে বাড়ছে তেমনি তীব্র যানজটে যাত্রীদের অসহায়ত্বও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এক বাস ড্রাইভার রোকনের সাথে সরাসরি কথা বলে জানা যায়, লিংক রোড ব্যবহারকারী যানবাহন এবং যাত্রীদের দিকে কোন খেয়াল নেই হাইওয়ে ট্রাফিক বিভাগের। তারা তাদের মহাসড়ক নিয়ে ব্যস্ত। ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। এতে ক্ষতি সাধণ হচ্ছে বাস কোম্পানি এবং বাস চালকদের।
আরেকজন বাস ড্রাইভার পারভেজ বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাওয়া আসার সময় শুধু মাত্র সাইনবোর্ড এলাকা পাড় হতেই কয়েক ঘন্টা লেগে যায়। কিন্তু সাইনবোর্ডের জ্যামের হিসেব বাদ দিলে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা আসা-যাওয়াতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট।
ভুক্তভুগী যাত্রীদের সাথে কথা বললে তারা যানযটে অতিষ্ট হয়ে বলেন, প্রতিদিন এক জায়গায় দীর্ঘ সময় যানযট লেগে থাকার কারনে কাজে সঠিক সময় পৌঁছানো খুব কষ্টকর হয়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায় রাতের ১২ টায় ও নারায়ণগঞ্জে চাষাড়ায় প্রবেশ করতেও সাইনবোর্ড এলাকায় ঘন্টা খানেক জ্যামে বসে থাকতে হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশ (প্রশাসন) টি আই এডমিন কামরুল ইসলাম বেগ বলেন, সাইনবোর্ড এলাকার সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করে হাইওয়ে ট্রাফিক বিভাগ। হাইওয়ের ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনায় আমাদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। আমরা চেষ্টা করছি লিংক রোডের পরিবহন গুলো যেন প্রতিবন্ধকতা ছাড়া চলাচল করতে পারে। এছাড়া ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে।
অন্যদিকে হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের টিআই প্রশাসন (শিমরাইল থানা) মোঃ মশিউর আলম বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের আট কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজারের বেশি ইজিবাইক চলাচল করে। আর এই ইজিবাইক পাড় করা হাইওয়ে পুলিশের মূখ্য উদ্দেশ্য নয়। আমাদের মূখ্য উদ্দেশ্য হল জরুরি যানবাহন গুলো পাড় করা। যে কারনে আমরা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের গাড়ি গুলো কম টানি এবং হাইওয়ের সড়ককে জ্যামমুক্ত রাখার জন্য সবসময় চেষ্টা করি। তিনি আরো বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ ট্যাফিক প্রশাসনকে বার বার অনুরোধ করেছি ইজিবাইক কমানোর জন্য। যদি তারা ইজিবাইক কমাতে না পারে তাহলে হাইওয়ের মত নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডকে যানজট মুক্ত রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর এই ট্র্যাফিক জ্যামের দায়ভার তাহলে নারায়ণগঞ্জবাসিকে নিতে হবে।
0 Comments