ইসলাম ধর্মের প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্মান প্রদর্শন


 শহীদুজ্জামান আতিফঃ 


দেশের বর্তমান সবচাইতে স্পর্শকাতর বিষয়টির নাম হচ্ছে ধর্ম। দূর্গা পূজাকে উদ্দেশ্য করে কুমিল্লাতে মূর্তির উপরে পবিত্র কুরআন রাখার মাধ্যমে মুসলিম এবং হিন্দুদের মধ্যে একটা সাম্প্রদায়িক বিবাদের সৃষ্টির চক্রান্ত চলছে গত কয়েক দিন ধরে। যার প্রতিক্রিয়ায় সারা দেশব্যাপি চলছে হিন্দু -মিসলিমদের হানাহানি। শুধু মাঠ পর্যায়ে নয় বরং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতেও চলছে দুই ধর্মের লোকেদের মধ্যে বাক্য যুদ্ধ। 


দেশের এরকম করুন পরিস্থিতিতে সকল শ্রেণী এবং ধর্মের মানুষকে তাক লাগিয়ে একটি দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছে রাজধানী ঢাকার উত্তরা সার্বজনীন পূজা কমিটি। তারা তাদের অধীনস্ত সকল পূজা মন্ডপগুলোতে ৫ ওয়াক্ত নামাজের নির্দিষ্ট সময়ের ব্যানার তৈরী করে লাগিয়েছে। যেটা পুরো দেশব্যাপি আলোচিত, সমালোচিত এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করছে। তারা মুসলমান ধর্মের ইবাদাতে বাধা সৃষ্টি যেনো না হয় সেই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ব্যানারটি লাগিয়েছে। একদিকে অন্যধর্মের প্রতি এ ধরনের শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের কারণে তারা যেমন হচ্ছে প্রসংশিত। ঠিক তেমনি অন্য একটি মহলের কাছে ব্যাপারটি অপছন্দনীয় হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। 


এ বিষয়ে উত্তরা সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি উত্তম কুমার সাহা বলেন, আমরা প্রতি বছর সমগ্র জগতের কল্যাণ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল জীবের সুখ ও শান্তি কামনায় শারদীয় দূর্গা পূজা উদযাপিত করি। সব সময় আমরা উত্তরায় শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপনে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অকুন্ঠ সহযোগিতা ও সমর্থন পেয়েছি। উত্তরায় তথা সারা বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন অক্ষয় ও অটুট হোক এটাই আমরা কামনা করি এবং সেই মানসিকতা থেকেই আমরা পূজা মন্ডপ গুলোতে মুসলিম ধর্মাবলম্বি ভাই-বোনদের নামাজের সময়ের ব্যানার লাগিয়েছি। আমরা চাই না আমাদের জন্য অন্য কোনো ধর্মাবলম্বীদের ইবাদাতে ব্যাঘাত ঘটুক। 


উত্তরার স্থানীয় এক ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যবসায়ীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা ধর্মের দিক থেকে আলাদা হলেও প্রকৃত অর্থে আমরা প্রথমে মানুষ। একে অপরের সাথে খুশি বন্টন করা এবং বিপদে পাশে থাকাটা জরুরী। যারা ধর্মের নামে মানুষে মানুষে ঝগড়া লাগায় তারা কোনো ধর্মেরই হতে পারে না। আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলে গেছেন, তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না। তাছাড়া আমরা উত্তরার সকল হিন্দু-মুসলমান সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ভাবে মিলেমিশে থাকি। এটাই আমাদের একতা।

Post a Comment

0 Comments