রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, রাজনীতিতে গুণগত মান নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতি হচ্ছে জনগণের কল্যাণের জন্য। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে তৃণমূল পর্যায়ে সঠিক জনমত গড়ে তুলতে হবে।’মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে তার প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন এ কথা বলেন।
প্রেস সচিব জানান, নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বঙ্গভবনে চলমান সংলাপের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। সেখানে তারা একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ছয়টি প্রস্তাবনা রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেন।
রাষ্ট্রপ্রধান একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ইসি গঠনের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন।
আবেদীন জানান, প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান।
ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা রাষ্ট্রপতিকে বলেন, নির্বাচন কমিশন যাতে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
নেতারা আরও বলেন, তারা বছরের শুরুতেই জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের জন্য প্রস্তাব করেন।
এছাড়া নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচনি আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার ব্যাপারে তারা মতামত দেন।
ওয়ার্কার্স পার্টি নির্বাচন কমিশন গঠনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণেরও প্রস্তাব দেয়।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ গত ২০ ডিসেম্বর সংলাপের প্রথম দিনে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেন।
এ পর্যন্ত মোট সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ এবং ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে আলোচনা হবে। ২ জানুয়ারি বৈঠক হবে গণফোরাম ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সঙ্গে। ৩ জানুয়ারি সংলাপ হবে গণতন্ত্রী পার্টি এবং বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।
বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
0 Comments