কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিলো দুই শিক্ষার্থী


 কক্সবাজার: কক্সবাজারের রামুতে এক সাংবাদিকের ৪০ হাজার টাকা হারানোর পাঁচদিন পর ফিরিয়ে দিয়ে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দুই শিক্ষার্থী। সড়কে কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাসও দেন।

অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে হারানো টাকার প্রমাণ পেয়ে টাকাগুলো প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়া হয়।

সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দুই শিক্ষার্থী হলেন- রামুর চাকমারকুল ইউনিয়নের মাতবর পাড়া এলাকার পান বিক্রেতা মহিউদ্দিনের ছেলে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল কবির ইমন ও পাশ্ববর্তী মিস্ত্রীপাড়া এলাকার নুর আহমদের ছেলে সাইমুম সরওয়ার।

রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপী গ্রামের বাসিন্দা ও মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কক্সবাজার প্রতিনিধি ও বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সুনীল বড়ুয়া জানান, গত ১৯ ডিসেম্বর তিনি একটি ব্যাংক থেকে তাদের ব্যবসায়িক কাজের জন্য দুই লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ওই দিন চৌমুহনী স্টেশনে একটি দোকানে বকেয়া টাকা পরিশোধ করেন এবং রামু উপজেলা পরিষদের সামনে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে ফের চৌমুহনী ফেরার সময় তার পকেট থেকে ৪০ হাজার ১৬০ টাকার একটি ব্যান্ডেল অসাবধানতাবশত পড়ে যায়।

পরে তিনি ওই সড়ক ও আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও টাকা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। এমনকি তিনি এ টাকা আবার পাবেন এমন আশাও ছেড়ে দেন।

কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে তিনি জানতে পারেন- ক’জন শিক্ষার্থী টাকাগুলো কুড়িয়ে পেয়েছেন। পরে সাজ্জাদুল কবির ইমন ও সাইমুম সরওয়ারের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া টাকার প্রমাণসহ যোগাযোগ করলে তারা টাকাগুলো ফেরত দেন।

সাংবাদিক সুনীল বড়ুয়া চিকিৎসা জনিত কারণে চট্টগ্রাম অবস্থান করায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তার পক্ষে সাংবাদিক সোয়েব সাঈদ ও ওবাইদুল হক নোমানের হাতে এসব টাকা তুলে দেন শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল কবির ইমন ও সাইমুম সরওয়ার। এ সময় কলঘর বাজারের ব্যবসায়ী কলিম উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

এলাকাবাসী জানান, সাজ্জাদুল কবির ইমন ও সাইমুম সরওয়ার দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এরমধ্যে সাজ্জাদুল কবিরের বাবা পান বিক্রি করে সংসার চালান আর সাইমুম সরওয়ার পড়াশোনার পাশাপাশি ইজিবাইক (টমটম) চালান। দরিদ্র হলেও তারা টাকার প্রতি লোভ করেননি। সততার এমন নজির বর্তমানে বিরল।

সাজ্জাদুল কবির ইমন জানান, তারা কজন বন্ধু একটি বেসরকারি সংস্থার কম্পিউটার প্রশিক্ষণে যাওয়ার সময় টাকাগুলো পান। কুড়িয়ে পাওয়া টাকা মায়ের কাছে জমা রেখে প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার জন্য একাধিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন। এখন টাকাগুলো ফিরিয়ে দিতে পেরে তারা আনন্দিত।

সাংবাদিক সুনীল বড়ুয়া- সাজ্জাদুল কবির ইমন ও সাইমুম সরওয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বাবা-মার সুশিক্ষা পেয়েছেন বলেই হয়তো তারা লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে কুড়িয়ে পাওয়া টাকাগুলো ফেরত দিয়েছেন। এটা তাদের জন্য যেমন প্রশংসার, তেমনি সবার জন্য অনুকরণীয়।

Post a Comment

0 Comments