ইসির সঙ্গে ‘লুকোচুরি’ খেলবেন শামীম ওসমান


 নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ‌‘আমাদের চলে যেতে হবেই হবে। আল্লাহর কাছে মাফ চান।

তাহলে আমি অন্তত একটু শান্তি পাবো। ফেরেশতা ভুল করবে না। শয়তান শয়তানি করবে, ফেরেশতা ভালো কাজ করবে। এখনও প্রকাশ্যে নামিনি। মনে কষ্ট ছিল। আজকে থেকে নামলাম। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে যতটুকু লুকোচুরি করে নামা যায় আমরা নামবো’।

সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের সংবাদ সম্মেলনের দিনটি ছিল আজকের এটা। কয়েকদিন আগে আমার বড় ভাই সেলিম ওসমান আমাকে বলেছিলেন একটা কথা- ‘এই নৌকা কার? আমি বললাম বঙ্গবন্ধু ও আপার। তিনি বললেন, তাহলে নেত্রীর হাতে ছেড়ে দাও। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার এক চুল বিরুদ্ধে চলে যাওয়ার আগে যেন আমাদের মৃত্যু হয়’।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বাঁধন কমিউনিটি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শামীম ওসমান।

তিনি বলেন, ‌‘আমি অবাক হই, আমি কেন সব সময় সাবজেক্ট হই। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) খুব ছোট একটা সিটি করপোরেশন। এখানে তৃণমূলের রাস্তা থেকে উঠে আসা নেতারা আছেন। তারা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাবিহীন বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করেছেন। আমার ফতুল্লায় কয়েকদিন আগে নির্বাচন হয়েছে। আমি যাইনি কথাও বলিনি।  

‘গরিবের বৌ সবার ভাবি হয়। একজন আমাকে নিয়ে নিচ্ছে আরেকজন আমাকে দিয়ে দিচ্ছে। আমি সত্য বলতে চাই। এই কয়েকদিন চুপ ছিলাম কারণ এটা আমার কাজ না। তবে, আমার চুপ থাকাকে কেন্দ্র করে অনেকেই দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। কেউ বাইরে থেকে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে আবার কেউ দলের ভেতর থেকে।  আমি মানসিকভাবে শকড একটা কারণে। আমি সেই পরিবারের সন্তান যে, পরিবারকে মোশতাক ফোন করেছিল, তখন আমার মা ভাষাসৈনিক তিনি আমার বাবাকে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাবের উত্তরে বলেছিলেন আমার স্বামী আপনার মন্ত্রী সভায় যোগ দিলে হয় তাকে হত্যা করবো না পারলে আত্মহত্যা করবো। মনসুর আলী চাচা যে, রুমে ছিলেন আমার আব্বাও সেই রুমে ছিলেন। সেদিন বাবা শুনেছিলেন তারা বলছিল আমাদের হত্যা করো আমরা শেখ মুজিবুরের লোক ছিলাম আছি এবং থাকবো। এই হাত দিয়ে ৫০টা লাশ দাফন করেছি। রক্তের ওপর শুয়েছিলাম বোমা হামলার পর কানে কিছু শুনছিলাম না। শুধু ভেবেছিলাম দেশটা বাঁচানের জন্য কাকে দরকার। আমরা কৈশোর, যৌবনের আনন্দ পাইনি। সেদিন বলেছিলাম শেখ হাসিনাকে বাঁচান। আমাদের সম্পর্কে অনেক অপপ্রচার হয়েছে। এমন কোন কাজ নেই যা করিনি বিদেশে। আমরা না খেয়ে জীবন কাটিয়েছি। পঁচাত্তর থেকে একবেলা ভাত খেয়েছি দুই বেলা খাইনি। আমার বড় বোনকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল মসজিদে একটা করে জিলাপি দিয়ে। এই ত্যাগ আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ পরিবারের। কিছুসংখ্যক তেলবাজদের কারণে সেই সব লোকদের মনে রক্তক্ষরণ হয়’।  

শামীম ওসমান বলেন, ‌‘এখানে কে নির্বাচন করতে নামেনি। মামলা-কামলা খাওয়া সবই তো এখানে নেমেছে। কারণ আমরা আমাদের ভেতরে জাতির পিতাকে লালন করি। ছোবল দেওয়া শক্তিদের বলতে চাই। বাংলাদেশ কারও পায়ে নয়, শেখ হাসিনার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি চন্দন শীল, সেক্রেটারি খোকন সাহা, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদাউস জুয়েল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহসিন মিয়া, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সেক্রেটারি শওকত আলী, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি মানু, এনায়েতনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান, বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ গাজী সালাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া প্রমুখ।

Post a Comment

0 Comments