বেগমগঞ্জ প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে নির্মাণাধীন একটি বাড়িতে হামলা, বাড়ির বাসিন্দাদের মারধর, শ্লীলতাহানি ও প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী-পুরুষসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে হামলাকারী কমপক্ষে দুই যুবকের হাতে একটি পিস্তল ও একটি পাইপগান দেখা গেছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হলেও আসামিদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
গত মঙ্গলবার উপজেলার আমানউল্লাহপুর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা এ সময় নির্মাণাধীন ভবনে ভাঙচুর করেন এবং নারীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
ঘটনার ভুক্তভোগী অভিরামপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম (৫০) থানায় করা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়িতে একটি পুরোনো ঘর ভেঙে নতুন পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। নির্মাণকাজ শুরুর পর পার্শ্ববর্তী আমানউল্লাহপুর গ্রামের মোহাম্মদ জুয়েল ও আবদুল আউয়াল এবং তাঁদের সহযোগী মো. মামুন, রায়হানসহ কয়েকজন লোক এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তবে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে এই ব্যক্তিরাই তাঁদেরকে একটি গরু ও একটি ছাগল দিতে বলেন। তিনি তা–ও দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জুয়েল, আবদুল আউয়াল, রায়হান, মামুনসহ ১৫-২০ জনের একটি দল অতর্কিতভাবে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান।
নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তাঁকে এবং বাড়ির অন্যান্য নারী-পুরুষদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। এ ছাড়া তাঁরা নারীদের শ্লীলতাহানি করেন। তাঁরা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ও বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখান। হামলায় তিনিসহ তাঁর পরিবারের কমপক্ষে পাঁচজন গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা এ সময় নির্মাণাধীন ভবনটিতে ভাঙচুর চালান এবং নারীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় তিনি ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৯-১০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন।
এদিকে সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চাঁদার দাবিতে বাড়িতে হামলা ও অস্ত্র উঁচিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের একটি ভিডিও গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি পুলিশের হাতেও পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নির্মাণাধীন বাড়িতে হামলা ও চাঁদাবাজির ঘটনা এবং প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘটনার পর আসামিদের সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
0 Comments