জেবি বাংলা নিউজ ২৪ ডেস্কঃ
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবিতে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনার রেশ কাটতে কাটতে না কাটতে আবারো আবারো যাত্রীবাহী লঞ্চের সঙ্গে পণ্যবোঝাই কার্গোর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১১ টার দিকে মদনগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় কার্গোর সঙ্গে যাত্রীবাহী লঞ্চ এম ভি নিউ আরিফের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিআইডবিøউটিএর উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা বিভাগ) বাবু লাল বৈদ্য।
প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী আফসানা তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, কিছুদিন পূর্বেই নারায়ণগঞ্জ টু মুন্সীগঞ্জ নৌরুটে লঞ্চ দূর্ঘটনার পর থেকেই চাঁদপুর টু নারায়নগঞ্জের সকল যাত্রীবাহি নৌযান চালানো সম্পূর্ন নিষেধ করা হয়। এতে নৌপথে চলাচলকারী সকল যাত্রিদের হাজার ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যাত্রীদের এই ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অবশেষে দুইটি লঞ্চ নৌকর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে চলাচলে নির্দেশ দেন। যার মধ্যে একটি লঞ্চ এম ভি নিউ আরিফ। এই লঞ্চটি সকাল ৭.৩০ মিনিটে চাঁদপুর থেকে ছেড়ে এসে আমিরাবাদ এবং সকাল ৯ টায় মহনপুর এবং সকাল ৯.৩০ মিনিটে ষাটনল ঘাট হয়ে সারে ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল হটাৎ নতুন তৈরী ব্রিজ টার সামনে থাকা জাহাজ গুলার গা ঘেসে এই লঞ্চটির চালক লঞ্চটিকে উঠিয়ে নেয় যদিও আমরা লঞ্চে উপস্থিত সবাই প্রথমে ভেবেছিলাম জাহাজ চালকের দোষ। এক মুহূর্তের মধ্যে লঞ্চের সব কিছু তছনছ হয়ে যেতে শুরু করে। শিশুদের মানুষের কান্নার স্রোত ক্রমশ বাড়তে থাকে। এ সময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। মানুষ হাত পা ছিলে ফেলে বাচ্চারা এবং মহিলারা নানাভাবে আহত হয়। এবং কিছু মানুষের পা ফেটে রক্তপাত ও শুরু হয়। এক ভদ্রলোক বাচ্চাসহ লঞ্চ থেকে পড়ে যায়। অল্পের জন্য পানিতে পড়েনি। লঞ্চটি পুরা এক কাত করে প্রায় দের মিনিটের কম সময় এক কাত করে চালায়। বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে যায়। পরবর্তীতে লঞ্চটিকে কোনভাবে ঠিক করে লঞ্চঘাটে নিয়ে আসার পর নৌ পুলিশ এবং নৌ কর্তৃপক্ষের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা আসে এবং এম ভি আরিফ এর চালককে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায় এবং আশ্বস্ত করে চালকে তারা যথাযথ শাস্তি দিবে। এখন আমার এবং আমাদের একজন সাধারণ যাত্রী হিসেবে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন, দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য যখন ছোট লঞ্চ বন্ধ করতে পেরেছেন তখন এই বড় লঞ্চ চালানোর জন্য চালকের দক্ষতা কতটুকু সেইটা কেন নজরদাড়িতে নেয়া হয়না। আজকে মহান আল্লাহ্ তায়ালার উসিলায় আজকে আমাদের এতগুলো মানুষের জীবন বেঁচে গেসে। যদি এই দূর্ঘটনাটা একটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করত, তখন কি করতেন আপনারা। ওই সময়কার পরিস্থিতিতে আমরা যারা উপস্থিত ছিলাম তারা অনুভব করেছি চোখে দেখেছি মানুষের চোখে মৃত্যু ভয়।বাচ্চাদের দেখেছি মা বাবাকে জড়িয়ে ধরে চিতকার করে কাঁদতে। তিন বছরের বাচ্চা ছেলেটি নিজের কপাল থাবড়ে বলছে কেন আসলাম, আমি কেন আসলাম বলে কাঁদছে।
বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা বিভাগ) বাবু লাল বৈদ্য বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যাত্রীবাহী লঞ্চ এম ভি নিউ আরিফের সঙ্গে একটি কার্গোর সংঘর্ষ হয়েছে। লঞ্চটি কাত হয়ে পড়ে । এত কিছু মানুষ আহত হয়েছেন। আমরা প্রাথমিকভাবে লঞ্চ চালক ও মাস্টারের ভুল খুঁজে পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
0 Comments