ঈদের ছুটি বাড়ানোর আলোচনা হতে পারে মন্ত্রিসভায়


 সাপ্তাহিক ছুটি ও মে দিবসের ছুটিসহ পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির মধ্যে একদিন অফিস খোলা। এই এক দিন ছুটি ঘোষণা হলে টানা নয় দিন ছুটি ভোগ করতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।


ঈদের ছুটি বাড়িয়ে পর্যায়ক্রমে যাতায়াতের পরামর্শ এসেছে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে। এ বিষয়ে সোমবার (১৮ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সরকারি ক্যালেন্ডারে আগামী ২ থেকে ৪ মে তিন দিন ঈদের ছুটি নির্ধারিত আছে। তার আগে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস তথা মে দিবসের ছুটি।

এর আগে ২৯ ও ৩০ এপ্রিল শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে এবার মূলত ঈদের ছুটি শুরু হবে ২৯ এপ্রিল।

মাঝখানে ৫ মে বৃহস্পতিবার অফিস খোলা। এর পর ৬ ও ৭ মে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ৫ মে ছুটি হলে টানা ৯ দিনের ছুটির ফাঁদে পড়বে দেশ।


ঈদের পর আগামী ৫ মে ছুটি হবে কিনা, সে বিষয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঝে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তারা বলছেন, একদিন ছুটি হলে টানা ৯ দিন ছুটি কাটাতে পারবেন তারা। ছুটি বাড়লে ঈদযাত্রায় যানবাহনের চাপ কমানোসহ সবারই সুবিধা।

তাই আগামী ৫ মে ঈদের ছুটির আওতায় আসবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে গত দুই বছর রমজানে লকডাউন তথা বিধি-নিষেধ ছিল। করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিধিনিষেধ উঠে যায়। দুই বছর পর এবারই স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এলো রমজান মাস। এ অবস্থায় রোজা শেষে ঈদের দীর্ঘ ছুটি পেলে অনেকেই পরিবার নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন।

এদিকে, যাত্রী কল্যাণ সমিতি রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, করোনা মুক্তির কারণে এবারের ঈদে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। এবারের ঈদে ঢাকা থেকে ১ কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। এতে ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে।


যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহনে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে। এজন্য বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সকল পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সংগঠনটির সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, আগামী ২৫ রমজান থেকে ১৬ লাখ যাত্রীর গণপরিবহন সংকট দেখা দেবে। ছুটি বাড়িয়ে এটি সামাল দেওয়া যায়।


গত বছরও ঈদুল ফিতরের ছুটি তিন দিন বাড়িয়ে ছয় দিন করার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট ঈদের ছুটি ছয় দিন করার সুপারিশ করে। সে ক্ষেত্রে নৈমিত্তিক ছুটি ২০ দিনের পরিবর্তে ১৪ দিন করার প্রস্তাব ছিল।

গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট ছুটি বাড়ানোর সুপারিশে বলা হয়, প্রধান ধর্মীয় উৎসবের ছুটি বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ লাঘব হতে পারে। ছুটি ছয় দিন হলে যানবাহনের ওপর চাপ, যানজট ও দুর্ঘটনা কমবে। ছুটি থেকে চাকরিজীবীদের কর্মস্থলে সানন্দে ফেরার প্রবণতা বাড়বে। অফিস খোলার দিন থেকে পুরোদমে অফিস চালু হবে; এতে অফিসের লিফট, গাড়িসহ ইউটিলিটি সার্ভিসের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হবে।

Post a Comment

0 Comments