সীমানাদেয়াল নির্মাণ ও চলাচলের পথ নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে এক পরিবারের সদস্যদের ওপর প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় দুই নারীসহ তিনজন আহত হয়েছেন। বুধবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের পূর্ব নিমাই কাশারী এলাকার মামা-ভাগনে গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
আহত তিনজন হলেন সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাই কাশারী এলাকার মৃত ইসমাঈল রানার স্ত্রী হামিদা বেগম (৫০) ও তাঁর ছেলে ফাহাদ বিন ইসমাইল (২৪) ও হামিদার বোন শায়লা বেগম (৪২)। তাঁরা তিনজন বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের পূর্ব নিমাই কাশারী এলাকার মামা-ভাগনে গলিতে মৃত ইসমাঈল রানার স্ত্রী হামিদা বেগম সাড়ে ৪ শতাংশ জমিতে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। বাড়িতে চলাচলের জন্য তিন ফুট এবং প্রতিবেশী মিজানুর রহমান তিন ফুট মোট ছয় ফুট চলাচলের জন্য রাস্তা রাখেন। হামিদা বেগমের জমির পূর্ব পাশে মোরশেদ আলম নামের এক পরিবহন ব্যবসায়ী তিন কাঠা জমি কেনেন। সেই জমিতে তিনি যাতায়াত করতেন পূর্ব পাশের রাস্তা দিয়ে। সম্প্রতি মোরশেদ চলাচলের পূর্ব পাশের রাস্তা বন্ধ করে সেখানে দেয়াল নির্মাণ করে দেন। সেই সঙ্গে হামিদার ব্যক্তিগত রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য আরও জায়গা দাবি করেন মোরশেদ। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে। কয়েক দিন আগে মোরশেদ ও তাঁর লোকজন হামলা চালিয়ে হামিদার সীমানাদেয়াল ভেঙে দেন। হামিদা আবার তাঁর জমিতে দেয়াল নির্মাণ করলে বুধবার রাতে মোরশেদ ও তাঁর লোকজন আবার হামলা চালান। এতে হামিদা, তাঁর ছেলে মো. ফাহাদ ও তাঁর বোন শায়লা আহত হন।
প্রতিবেশী মিজানুর রহমান বলেন, তাঁরা জমি কিনে নিজেদের চলাচলের জন্য রাস্তা করেছেন। কিন্তু মোরশেদ জোর করে ওই জমি দিয়ে রাস্তা চান। তাঁদের চলাচলের জন্য তিন ফুট রাস্তাও দেওয়া হয়েছে। বুধবার মোরশেদ আলম ও তাঁর ভাড়া করা লোকজন নিয়ে হামিদা বেগমের বাড়িতে হামলা চালান। এতে তাঁরা তিনজন রক্তাক্ত ও জখম হয়েছেন।
অপর প্রতিবেশী শাফিয়া বেগম বলেন, ‘ধারালো ছুরিসহ মোরশেদের ভাড়া করা লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে তাঁদের আহত করেছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে পুরো পরিবার আতঙ্কে আছে।’
আহত ফাহাদের মামা রোকনুজ্জামান বলেন, স্থানীয় ক্যাডারদের নিয়ে হামলা করে তাঁর দুই বোন ও ভাগনেকে আহত করা হয়েছে। যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এলাকায় মাস্তানি করে বেড়ান।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আহত ফাহাদ বিন ইসমাঈল। যাঁরা হামলা চালিয়েছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তাঁরা।
অভিযোগের বিষয়ে মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁরা কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের লোক। তিনি কাউকে হামলা করতে নির্দেশ দেননি। এ বিষয়ে কাউন্সিলর বাদল ভালো বলতে পারবেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। তাঁর লোকজন সেখানে পাঠাননি। তাঁর নাম ভাঙিয়ে কেউ কিছু করে থাকলে সেটা তিনি জানেন না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, এই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ তদন্ত করে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 Comments