চাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থা নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর


মেহেদী হাসান শুভ (চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি)

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।নেই দুইদিন যাবত পানি। সময়মতো খাবার পাচ্ছেনা রোগীরা। আর ডাক্তারগন নিয়মিত রোগীর সাথে সাক্ষাৎ করছে না। সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,হাসপাতালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা-আর্বজনা।কয়েকটি বেডের উপরে শুয়ে আছে রোগীরা। হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতর ঢুকলে কারোরই বিশ্বাস হবে না যে, এটি একটি সরকারি হাসপাতাল। ওয়ার্ডের পাশে বাথরুম, এখানে রোগীর মলসহ নোংরা আবর্জনা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করছে। মতলব উত্তর উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষের বসবাস। এই উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দোতলায় ওয়ার্ডে গিয়ে মাত্র দুই জন নার্সের দেখা মেলে। হাসপাতালের বিছানা ও পরিবেশ এমন অবস্থায় রয়েছে একজন সুস্থ মানুষও হাসপাতালে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন। এদিকে রোগীদের সরবরাহ করা খাবার নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ আছে। রোগীদের অনেকেই হাসপাতালের খাবার খান না। উপজেলার রুহিতারপাড় গ্রামের প্রবাসী নুরমোহাম্মদ (৩৪) বলেন, 'আমি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ৩ দিন যাবত এ হাসপাতালে ভর্তি আছি। যেসব খাবার দেওয়া হয় তা খুবই নিম্নমানের ও গন্দযুক্ত। এই খাবার মুখেই নেওয়া যায় না। তাই বাইরে থেকে খাবার এনে খাই।' ৭০ বছর বয়সী তালতলী গ্রামের হাওয়া বেগম বলেন, 'শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১৩ দিন ধরে ভর্তি আছি। দুই দিন ধরে পানি নাই। শিকারী কান্দি গ্রামের পারুল বেগমের স্বামী মজিবুর রহমান বলেন, কারেন্ট চলে গেলে খুব সমস্যা হয়, নেই জেনেরেটর। অক্সিজেন নেই বলে ও তিনি জানান। আরেক প্রবাসী তাজুল ইসলাম জানান, ৩ দিন হলো হাসপাতালে ভর্তি। দুর্গন্ধ আর ময়লার কারনে বাথরুমে যাওয়া যায়না। দুর থেকে পানি কিনে আনতে হয়। এমন জানলে এখানে চিকিৎসা নিতে আসতাম না। নিচ তলায় এক জায়গায় লিখা আছে এখানে বিশুদ্ধ পানি। কিন্তু বাস্তবে গিয়ে বিশুদ্ধ পানিতো দুরের কথা কোন পানিই পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কর্মরত চিকিৎসকরা বলেন, 'আমরা সার্ভিস দিতে প্রস্তুত। কিন্তু হাসপাতালে জনবলের তীব্র সংকট।' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের আরএমও ডা. হাসিবুল হাসান বলেন, 'হাসপাতালে পানির মটর নষ্ট হয়ে গেছে, পানি না থাকার কারনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ইলেক্টিশিয়ান চেষ্টা করছে মোটর ঠিক করতে। ঠিক হলে পানি আসবে, আর পানি এলেই পরিস্কার করা যাবে।তাছাড়া জনবলেরও সংকট রয়েছে।'

Post a Comment

0 Comments