হীমেল কুমার মিত্র
স্টাফ রিপোর্টার
স্বাধীনতার ৫২ বছর
তরুণদের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ
একাত্তরে স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বন্ধ থেমে যায় অগ্রগতির চাকা। ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে অন্ধকার যুগে টেনে নিতে চেয়েছিল দেশকে। তবে বহু বাধা পেরিয়ে আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। স্বাধীনতার পর শূন্য থেকে শুরু করা বাংলাদেশের ফিনিক্স পাখির মতো উত্থান হয়েছে সগৌরবে।
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত দেশের তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা আগামীর বাংলাদেশকে কোথায় দেখতে চান, নিজেদের কাজের মাধ্যমে স্বপ্নের বাংলাদেশকে কোন অবস্থানে নিতে চান এসব বিষয়ে কথা বলেছেন সময় সংবাদের সঙ্গে।
২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা পৌঁছাতে কাজ শুরু করে সরকার। এ ধারাবাহিকতায় আজ প্রত্যন্ত গ্রামেও মিলছে ইন্টারনেট সেবা।
প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা দিয়ে আগামীর বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন রংপুর নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হীমেল মিত্র (অপু)। তিনি বলেন, ‘অতীতের আফসোস কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ যেন আজ ১টি সম্ভাবনার অবারিত দুয়ার। বৈশ্বিক ও ভৌগোলিক সুবিধা ব্যবহার করে বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার দুবাই।
প্রযুক্তিখাতে বেশি গুরুত্ব দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে আমাদের এগিয়ে যাওয়া নিশ্চিতে প্রযুক্তিখাতে গুরুত্ব দেয়ার বিকল্প নেই। কারণ আগামীর বিশ্ব হবে প্রযুক্তি নির্ভর। এ কারণে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি মোটামুটি আমাদের সেবার মানও বাড়াতে হবে।
হীমেল মিত্র অপুর মতে, ‘এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক ও ওষুধ রফতানিতে আমাদের ভালো অবস্থান রয়েছে। তবে আগামী দিনে প্রযুক্তিখাতের বিকাশ হবে। প্রযুক্তিপণ্যই হবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত। দক্ষ জনবল তৈরি এবং তাদের মাধ্যমে সেবা দিয়ে আমরা আইটিখাত দখল করে নিতে পারি।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কিছু মানুষ ঘরে বসে বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংক হাসপাতালে, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে সেবা দিচ্ছেন। তাদের চলাফেরা কথাবার্তায় তা বোঝা যায় না। কিন্তু এরাই কোটি টাকা আয় করছেন। এমন সংখ্যা খন কম না। আমাদের এই সম্ভাবনার তরুণদের জন্য ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ গড়ে দিতে হবে। সরকার ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করে দিচ্ছে। এর সুফল হয়তো আগামী কয়েক বছরেই আমরা পাব।’
তৈরি পোশাক বাংলাদেশের অন্যতম রফতানি পণ্য। ১৯৮০ সালে তৈরি পোশাক রফতানির শুরু। সস্তা শ্রমের ওপর ভিত্তি করে আজ এই খাতটি হয়ে উঠেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস। এই খাতের সঠিক ব্যবহার এবং বিভিন্ন ধরনের বাধা দূর করার দাবি জানিয়েছেন তৈরি পোশাক নিয়ে কাজ করা তরুণ আতিকুর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশই এখন আসছে তৈরি পোশাক থেকে। এই খাতের উন্নয়নে অটোমেশন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং কাঁচামাল উৎপাদনের বিকল্প নেই। তৈরি পোশাক উৎপাদন এবং রফতানিতে অনেক ক্ষেত্রে অন্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হয়। এটা কমিয়ে আনতে হবে। রেগুলার প্রোডাক্টের পাশাপাশি ভ্যালু অ্যাডেড প্রোডাক্ট উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার এমন সময়ে জীবনবোধে নতুন উপকরণ যুক্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন সময়ে নতুন নতুন উপকরণের ব্যবহারে আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তথ্যের প্রাপ্যতা ও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতি রুখে দেয়া সম্ভব। পরবর্তী সময়ে এসব বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেয়া হলে নিশ্চিত হবে দেশের উন্নতি।’
তবে এ জন্য অংশীজনদের আন্তরিকতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন হীমেল মিত্র অপু।
0 Comments