নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ফরাজীকান্দা এলাকায় কথিত হোন্ডাবাহিনীর জমি দখলের বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসলেও তা যেন ক্রমে ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন নারায়ণগঞ্জবাসী। নারায়ণগঞ্জের একজন সাবেক সংসদ সদস্য’র ছেলের গড়া এ হোন্ডাবাহিনীর কাজই হচ্ছে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে নিরীহ মানুষের জমি দখল ছাড়া চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম। আর এ হোন্ডা বাহিনীর অন্যতম সদস্য সিদ্ধিরগঞ্জের আরামবাগ এলাকার হাবিবুর রহমান হবির ছেলে কাজি আমির ওরফে কিলার আমির। স্থানীয় এক কাউন্সিলরের ছত্র-ছায়ার পাশাপাশি সাবেক সাংসদ পুত্রের সাথে সখ্যতার ফলে অধিক বেপরোয়া বনে গেছেন এ কাজি আমির। এমন সংবাদ প্রকাশের সিদ্ধিরগঞ্জসহ পুরো জেলাতেই ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে শুরু করেছে। রেলওয়ের জমি হতে শুরু করে রোডস এন্ড হাইওয়ের জমি এমনকি নিরীহ মানুষের জমি ভুয়া দলিলে জোড়পুর্বক দখল,চাদাবাজি,ছিনতাই,ডাকাতি,মাদক বিক্রিসহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা উক্ত বাহিনীর দ্বারা হচ্ছেনা।
স্থানীয়দের দাবী, সুবিশাল বাহিনী গড়ে তোলে এলাকায় সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজি,ভুমিদস্যুতা,অবৈধভাবে নদী তীরের মাটি কেটে নেয়া,নদী পথে বালুবাহী বাল্কহেড আটক করে চাদাঁবাজি,মাদক বিক্রি,জুট সন্ত্রাসীসহ নানাবিধ অপরাধ করে যাচ্ছে এ আমির। সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে অন্যের কাছে পজিশন বিক্রি করছে এ বাহিনী। সরকারী জমি পজিশন আকারে বিক্রির পর আমিরের অপর বাহিনী যাচ্ছে উক্ত পজিশন সংগ্রহকারীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে ভীতির মাধ্যমে। স্থানীয়রা আরো জানান,কাজি আমির বাহিনীর সদস্যরা এ সকল অপকর্মের মাঝে রেখেছে প্রয়াত সাংসদ এর ছেলের ছবিটি। অথ্যাৎ আমির বাহিনীর প্রতিটি অপকর্মের সাথে আজমেরী ওসমানের নাম ও ছবি ব্যবহার করে নিরীহদের মাঝে ভীত সঞ্চার করছে। এছাড়াও আমিরের রয়েছে নিজস্ব কিশোরগ্যাং বাহিনী ও আগ্নেয়য়াস্ত্র ভান্ডার। এক সময়ে দুর্ধর্ষ নরঘাতক রকমত ও ক্রসফায়ারে নিহত মাষ্টার দেলুর সহযোগিরা এখন আমির ছায়াতলে থেকেই করছে অপরাধকর্ম এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরা সাটিয়ে মাদক ব্যবসাসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রন এমনকি কাজি আমিরের বেশ কয়েকটি চর্টারসেল সেন্টারও রয়েছে যার ফলে ভয়ে কিছুই বলতে চায়না ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীরা আরও বলেন,কাজি আমির ও তার বাহিনীর কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্রগুলো দ্রুত উদ্ধারের দাবী জানান। নতুবা এ সকল অস্ত্র নিয়ে তার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয়দেরকে আরও বিপদগ্রস্ত করে তুলবে।
স্থানীয়রা আরো জানান, বন্দরের জমি দখলের বিষয়টি পুরো শহরজুড়ে আলোচনায় থাকলেও বর্তমানে আরো বেশী আলোচনা চলছে উক্ত ঘটনায় মামলা হলেও কিছু আসামী ছাড়া অন্যান্য আসামীদেরকে গ্রেফতার না করতে পারা। বিগত সময়ে এ হোন্ডা বাহিনী আরো গুরুতর অপরাধ করলেও সেই ঘটনায় সঠিক বিচার না করার ফলে সাবেক সাংসদ এর অন্যতম সহযোগি কাজি আমিরগংরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আর এ হোন্ডাবাহিনীর সদস্যরা বেশীরভাগ নগরীর হাজিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা যারা সবাই কাজি আমিরের সহযোগি। এরা হলেন, শুটকি মনু’র ছেলে রবিন ওরফে শুটকি রবিন, বদুরউদ্দিন পাগলার ছেলে পটু,আবদুল আজিজের ছেলে জুয়েল, মৃত.আবদুল কাদেরের ছেলে রহমান,মহিউদ্দিনের ছেলে রনি,মান্নানের ছেলে সোহাগ, সোহেল ফকিরের ছেলে জিন্দান দৌলতের ছেলে শাওন, এসহাক মিয়ার ছেলে রাসেল, মৃত.হাসেমের ছেলে আবু বক্কর মোল্লা, নুর মোহাম্মদ এর ছেলে রনি, মোহর আলীর ছেলে খোকন, কবির,তোফাজ্জল,রায়হান,শামীম,পিস্তল রিফাত ও কাজি আমিরের বেয়াই পরিচয় দানকারী আরামবাগের রিংকুসহ একাধিক সন্ত্রাসী।
আরামবাগসহ আশপাশ এলাকার অনেক বাসিন্দা বলেন,কাজি আমির বর্তমানে কন্ট্রাকে বিভিন্ন অপরাধ করে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভুমিদস্যুতা। সিদ্ধিরগঞ্জ পেরিয়ে এখন হোন্ডাবাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে জেলার একাধিক জায়গায় নিরীহ মানুষের জমি জবর-দখলের মহড়ায় নেমেছে। সাবেক সাংসদ এর ছেলের নাম ভাঙ্গিয়ে একের পর এক অপরাধ করে বেড়ালেও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কেনইবা ওকে গ্রেফতার করছেনা তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছেনা। যার ফলে কোন প্রকার অপরাধ করতে সে ভয় পায়না। সম্প্রতি বন্দরের ফরাজীকান্দায় জমি দখলের ঘটনায় আমির এজাহার নামীয় ৫ নং আসামী। অথচ দিব্ব্যি প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। আইন-শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ঐ ঘটনার সাথে জড়িত আমিরসহ অন্যান্য আসামীদেরকে গ্রেফতার না করায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ করেন তারা।
তারা অনতিবিলম্বে বন্দরের ঘটনাসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত কাজি আমিরসহ সকল আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেফতারে র্যাব-১১ ও পুলিশ সুপারের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
0 Comments