কুমিল্লার চান্দিনায় পুলিশের পোশাক পড়ে বান্ধবীকে নিয়ে রিক্সায় বেড়ানোর সময় মো.
সাগর হোসেন (১৯) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদরের চান্দিনা-ছায়কোট সড়ক
থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি ভ‚য়া পুলিশের আইডি কার্ড
উদ্ধার করা হয়।
মো. সাগর হোসেন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার রতনপুর গ্রামের মো. তাজুল ইসলাম এর ছেলে। পিতা অন্যত্র বিয়ে করায় মা আনোয়ারা বেগম এর সাথে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা ইউনিয়নের ভয়েরপাড় এলাকায় নানার বাড়িতে বসবাস করে। সে
কুমিল্লা ইপিজেড-এর একটি কুকারিজ কোম্পানীতে চাকুরী করে বান্ধবীর কাছে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে আসছিল।
জানা যায়, ছোট বেলায় সাগর এর মা-বাবার বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ায় মা আনোয়ারা
বেগম গার্মেন্টেসে কাজ করে সাগর হোসেন ও তার ছোট বোনকে বুকে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সাগর স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে ২০২২ সালে দাখিল পাশ করে কুমিল্লা পাঠশালা কলেজ ভর্তি হয়।
এসময় দেবীদ্বার উপজেলার ব্রাহ্মণখাড়া গ্রামের
এক নারী সহপাঠির সাথে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। কয়েক মাস পূর্বে সারা দেশে পুলিশ কনস্ট্রেবল নিয়োগে তার চাকুরী হয়েছে বলে বান্ধবীকে জানায়। এসময় পুলিশের পোশাক
পড়ে বান্ধবীকে ছবি তুলেও পাঠায়।
এরই মধ্যে ওই বান্ধবীকে নৌ-বাহিনীতে চাকুরী
দিবে বলে প্রলোভন দেখাতে শুরু করে ওই যুবক। ইতিমধ্যে তার বান্ধবীর কাছ থেকে সকল কাগজপত্রও নিয়ে নেয় সে। ওই বান্ধবীর সাথে চলা ঘনিষ্ট সম্পর্কের অপর বান্ধবীকেও ওই চাকুরী দিবে বলে শুক্রবার পোশাক পড়ে চান্দিনায় আসে সাগর হোসেন। ওই বান্ধবীকে চাকুরী দেওয়ার জন্য তার বাড়ি চান্দিনা পৌরসভার ছায়কোট এলাকা থেকে কাগজপত্র
আনতে নিজ বান্ধবীকে নিয়ে রিক্সায় যাওয়ার পথে নজরে পড়ে চান্দিনা থানা পুলিশের।
এসময় চান্দিনা থানা পুলিশের কাছে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঢাকায় কর্মরত আছে বলে দাবী করেন ওই যুবক। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। চান্দিনা থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোস্তফা কামাল জানান, পুলিশের পোশাক পড়া যুবক ও অপর একটি মেয়ে ছায়কোট এলাকার দিকে যাওয়ার সময় তার আচরণ ও পোশাকটি সন্দেহজনক হওয়ায় আমি রিক্সা থামাই। এসময় তার কথায় যথেষ্ট গড়মিল
থাকায় থানায় নিয়ে আসি। পরবর্তীতে জানতে পারি বান্ধবীর কাছে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিতে এ কৌশল নিয়েছে ওই যুবক। এসময় তার কাছ থেকে পুলিশের একটি ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করি।
চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. সাহাবুদ্দীন খাঁন জানান, যে মেয়েটি তার বান্ধবী তাকেও থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভনের বিষয়টি নিশ্চিত হই। এ ঘটনায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
0 Comments